শ্রমিক নেতারা জানান, খনিতে কয়লা উত্তোলনে নিয়োজিত রয়েছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, সিএমসি-এক্সএমসি এবং জেএসএমসি কনসোর্টিয়াম। এসব প্রতিষ্ঠানের অধীনে খনিতে কয়লা তোলার কাজ করছে স্হানীয় প্রায় ১১শ’ দেশি শ্রমিক। মহামারি করোনার কারণে, টানা দু’বছর ধরে চারশ’ শ্রমিককে খনিতে আটক রেখে কয়লা তোলা হয়। আর কাজ বঞ্চিত রাখা হয় সাতশ’ শ্রমিককে। এসময় ছুটিতে থাকা শ্রমিকদের সাড়ে চার হাজার করে কয়েক দফায় ভাতা পরিশোধ করা হলেও, আট মাস ধরে ভাতা না পেয়ে মার্চ মাস থেকে আন্দোলনে নামে সুবিধা বঞ্চিতরা।
বড় পুকুরিয়া শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, “গত শুক্রবার (১৩ মে) রাতে, খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এ সময়, ধাপে ধাপে শ্রমিকদের কাজে যোগদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
শর্ত অনুযায়ী, শনিবার সকালে, প্রথম দফায় ২১২ জন শ্রমিকের করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব শ্রমিকের নেগেটিভ আসবে তারাই শুধু খনিতে প্রবেশ করে এক সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন শেষে কাজে যোগদানের সুযোগ পাবে।
সপ্তাহে ২০০ জন করে, মোট ৮৫০ জন শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে খনিতে প্রবেশের অনুমতি দেবে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, করোনাকালিনে আট মাসের বকেয়া বেতন ভাতার দাবির বিষয়টি, ঢাকায় পেট্রোবাংলা দপ্তরে, শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান জানান, “শুক্রবার রাতের বৈঠকে আংশিক দাবি মেনে নিলে, আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
এদিকে, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান বলেন, “শুক্রবার রাতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার পর, শনিবার ২১২ জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে খনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সাত থেকে ১০ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর, তাদের কাজে যোগদান করানো হবে।”
উল্লেখ্য, খনির প্রবেশ পথ উন্মুক্ত করে সকল শ্রমিককে কাজে যোগদান এবং আট মাসের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে গত দুমাস ধরে খনি এলকায় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং খনির প্রবেশপথে অবস্থান গ্রহণসহ ধারাবাহিকভাবে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছিল শ্রমিকেরা।