শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে সহিংসতার নিন্দা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। (ফাইল ছবি)

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলে আর কোন সহিংসতার ঘটনা বন্ধ করার লক্ষ্যে অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন।

দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানীর এবং বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে কয়েক সপ্তাহের ক্ষোভের পরিণতি শেষপর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সহিংসতার একদিন পর সোমবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

তবে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা রাজধানী কলম্বোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করার পর, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মারাত্মক দাঙ্গায় পরিণত হয় এবং বিক্ষুব্ধ জনতা পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের ওপর পালটা হামলা চালায়।

ওই সহিংসতায় সাত জন মারা গেছে এবং ২৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বেশ কিছু ভূসম্পত্তি পুড়ে গেছে। ব্যাচেলের মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল বলেছেন, হাইকমিশনার এই ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

থ্রোসেল বলেছেন, "হাইকমিশনার সব ধরণের সহিংসতার নিন্দা করেছেন এবং কর্তৃপক্ষকে স্বাধীনভাবে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং স্বচ্ছভাবে সমস্ত হামলার তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে”। এছাড়া তিনি বলেছেন, “যারা সহিংসতাকে উস্কানি দেয় বা সংগঠিত করে, তারাসহ যারা যারা দায়ী, তাদের সকলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশটি বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটকের সম্মুখীন হয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি জনগণকে তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে তাদের অভিযোগ জানাতে রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।

থ্রোসেল বলেন, হাইকমিশনার সমস্যাগুলো মোকাবেলায় জাতীয় সংলাপ এবং গভীর কাঠামোগত সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।

হাইকমিশনার ব্যাচেলে আরও সহিংসতা প্রতিরোধ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষার জন্য শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার কার্যালয় দেশটির কর্মসূচিগুলি পর্যবেক্ষণ করবে এবং সেগুলি সম্পর্কে রিপোর্ট করবে।

শ্রীলঙ্কার উপর তার কার্যালয় এর করা অতীতের তথ্য-অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলি সরকারী নীতিগুলির সমালোচনা করেছে, এবং একে তারা ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করেছে। ব্যাচেলে বলেন, তিনি আশা করেন সরকার জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে শক্তিশালী করতে বর্তমান সংকটের শান্তিপূর্ণ একটা সমাধান খুঁজে বের করবে।