শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সোমবার পদত্যাগ করেছেন। এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এমন বিক্ষোভ চলছিল। মাহিন্দা রাজাপাকসের ভাই দেশটির রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রীর এক সহকারী, বিজয়ানন্দ হেরাথ, নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে রাজাপাকসে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় কর্তৃপক্ষ সোমবার সশস্ত্র সৈন্য মোতায়েন করার পর এমন পদত্যাগের খবর জানা যায়। ঐ দিন এর আগে সরকারের সমর্থকরা বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বাইরে অবস্থান নিয়েছিলেন।
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্রটি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। বিদেশী ঋণের কিস্তি পরিশোধ স্থগিত করে রেখেছে দেশটি। তাদের অর্থনৈতিক সংকট রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে। দেশটির সরকার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে এবং সংসদে অনাস্থা ভোটের সম্মুখীন হয়েছে। সোমবার শ্রমিক ইউনিয়নগুলোও সাধারণ হরতালের ডাক দেয়। রাষ্ট্রপতি এবং তার পরিবারের ক্ষমতাসীন সদস্যরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত হরতাল চলবে বলে জানিয়েছে তারা।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের অর্থ হল যে সরকারের পুরো মন্ত্রীসভাও ভেঙ্গে গিয়েছে।
সোমবার দিনের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা তার দফতরের ভেতর মিছিল করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিক্ষোভকারীদের করা পদত্যাগের দাবিকে উপেক্ষা করতে অনুরোধ জানান। এরপর তারা দফতরের সামনের দিকে বেরিয়ে আসেন। সেখানে কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ করে আসছিলেন। সিরাসা টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা যায় যে, সরকারের সমর্থকরা বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিসোটা ও লোহার রড দিয়ে আক্রমণ চালায়। তারা বিক্ষোভকারীদের তাবু ভেঙ্গে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।
আক্রমণের পর রাজধানীতে শত শত সশস্ত্র সেনা মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রমণ প্রতিহত না করার অভিযোগ আনেন, যদিও পুলিশ শুক্রবারের বিক্ষোভকারীদের উপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে।
সিরাসা টিভিতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের উপর সরকারের সমর্থক হামলাকারীদের মধ্যে, সাংসদ সানাথ নিশান্থও রয়েছেন।
কলম্বোর প্রধান হাসপাতালে ২৩ ব্যক্তি জীবনের জন্য হুমকি নয় এমন আঘাত নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার অনুমতি না থাকায়, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানান।