চার বছরেরও বেশি সময় পর কিউবায় ভিসা পরিষেবা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র

কিউবার হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পাশ দিয়ে একটি পুরানো আমেরিকান গাড়ি যাচ্ছে। ৩ মে ২০২২। “সোনিক হামলার” অভিযোগে ২০১৭ সাল থেকে ভিসা স্থগিত করার পর কনস্যুলেট সম্প্রতি কিছু অভিবাসী ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া আবার শুরু করেছে৷

কিউবায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস চার বছরেরও বেশি সময় আগে দূতাবাসের কর্মীদের ওপর কথিত সোনিক (বিশেষ এক ধরনের আলট্রা শব্দতরঙ্গ। যা কাউকে অক্ষম করতে ব্যবহার করা হয়) হামলার পর মঙ্গলবার (৩ মে) প্রথমবারের মতো ভিসা দেওয়া শুরু করেছে।

২০১৭ সালে আমেরিকান কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা রহস্যজনক অসুখে আক্রান্ত হলে ওয়াশিংটন হাভানার কনস্যুলার সার্ভিসগুলো বন্ধ করে দেয়। অসুখটি পরবর্তীতে “হাভানা সিনড্রোম” নামে পরিচিতি পায়।

ভিসা পরিষেবা স্থগিত করার ফলে অর্থনৈতিক মন্দার কবল থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে উৎসুক অনেক কিউবান নাগরিক সমস্যায় পড়েন।

কনস্যুলার বিভাগে অপেক্ষায় থাকা ভিসা প্রত্যাশীদের ছোট একটি দলের উদ্দেশে কিউবান একজন কর্মী বলেন, “এতদিন পর দূতাবাসে স্বাগতম”।

যুক্তরাষ্ট্র দুই মাস আগে “সীমিত পরিসরে” ও “ক্রমান্বয়ে” দূতাবাস এবং কনস্যুলার সার্ভিস পুনরায় চালু করার ঘোষণা দেয়।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কথিত সোনিক আক্রমণের জবাবে ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দেন।

২০২০ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অসুখটি সম্ভবত “ধ্বনিসৃষ্ট রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (আরএফ) শক্তি” থেকে উদ্ভূত।

দূতাবাস বন্ধের পরে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসেবে প্রবেশে ইচ্ছুক কিউবানরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে আবেদন জমা দিতে কলম্বিয়া বা গায়ানায় ভ্রমণ করেছেন।

আবার অনেকে মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকো হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এবং অনথিভুক্ত অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিভাগ থেকে জানানো হয়, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে এই বছরের মার্চ পর্যন্ত ৭৮ হাজারেরও বেশি কিউবান মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন।

বিদ্যমান অভিবাসন চুক্তি অনুসারে, প্রতি বছর ২০ হাজার কিউবান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী ভিসা প্রদান করার কথা থাকলেও, লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

উল্লেখ্য, করোনভাইরাস সংক্রমণ এবং এর ফলে পর্যটন হ্রাসের কারণে কিউবা প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে।