সৌদি আরব নিজেদের কঠোর বিচারব্যবস্থা পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ড এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি কঠোর আচরণ সংস্কারগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। যার ফলে আদতে কতটা পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ইসলামী শরিয়া আইনের কট্টর ব্যাখ্যার জন্য দেশটি সুপরিচিত। শরিয়া আইনই দেশটির বিচারব্যবস্থার মূল ভিত্তি।
তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটি সংস্কারের পথে অগ্রসর হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন যে এর ফলে দেশটির আদালতগুলো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মত করে পরিচালিত হতে পারবে।
এমন প্রচেষ্টা সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে কয়েকটি নতুন আইনের উপর নির্ভর করছে। এমন বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, নারীদের তালাকের অধিকার এবং ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তিতে বিচারকদের ক্ষমতা।
কার্যত দেশটি শাসনকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, গত বছর পদক্ষেপগুলোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেসবের মধ্যে দেশটির প্রথম লিখিত দণ্ডবিধি রয়েছে। পদক্ষেপগুলো সৌদি আরবকে বিশ্ব দরবারে আরও উন্মুক্ত করার এবং নিজেদের কট্টরপন্থী ভাবমূর্তি হ্রাস করার লক্ষ্যের সাথে মিলে যায় বলেই প্রতীয়মান হয়।
এমনকি সমালোচকরাও স্বীকার করেন যে, এমন পরিবর্তন কিছু ক্ষেত্রে সৌদি আদালতগুলোকে আরও নিয়মের মধ্যে আনবে।
তবে বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কোন প্রত্যাশা করা হচ্ছে না। এমন প্রত্যাশাও করা হচ্ছে না যে, সরকারবিরোধী হিসেবে বিবেচিতদের ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থা নমনীয় হবে।
এমন সংস্কার সত্ত্বেও, কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড একই সময়ে এটাও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, সৌদি আরবের এমন নিষ্ঠুর এক ভাবমূর্তি কেনই বা তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, “সন্ত্রাসের” সাথে সম্পর্কিত অপরাধে মার্চ মাসে এক দিনে ৮১ জনের গণ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মত ঘটনা।
তবে, সৌদি আরবের বিচার ও আইনী ব্যবস্থার সংস্কারের যে কোন আলোচনাতেই, ২০১৮ সালের খাশোগজি হত্যাকাণ্ড ছায়া হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময়ে সমালোচক ও কলামিস্ট জামাল খাশোগজিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করে দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা মূল্যায়নে দেখা যায় যে, খাশোগজিকে আটক বা হত্যার উদ্দেশ্যে অভিযানের জন্য যুবরাজ মোহাম্মদ নিজেই “অনুমোদন” দিয়েছিলেন। যদিও, সৌদি কর্মকর্তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন যে সেটা একটা “অননুমোদিত” অভিযান ছিল।