হাইতিতে অপরাধীচক্রের লড়াই-এ ২০ জন নিহত, বিতাড়িত হাজার হাজার লোক

গত বছর প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসকে হত্যার পরে রাষ্ট্র ক্ষমতা শূন্য হয়ে পড়ায় গ্যাংগুলি আরও এলাকার নিয়ন্ত্রণ দখল করলে লোকজন পরিবার নিয়ে পালাচ্ছে

হাইতিতে এ সপ্তাহে অপরাধমূলক সহিংসতা আরও বেড়ে গিয়েছে। রাজধানীর কিছু অংশে গ্যাং বা অপরাধীচক্রের মধ্যেকার লড়াই-এ তারা হাজার হাজার লোককে তাদের বাড়ি থেকে তাড়া করে এবং শিশুসহ কমপক্ষে ২০ জনকে হত্যা করে।

হাইতির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তরে পোর্ট-অ-প্রিন্সের চারটি এলাকায় রোববার এই লড়াই শুরু হয়। ঐ ঘটনায় অন্তত এক ডজন ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পালিয়ে যাওয়া অনেকেই প্রাথমিকভাবে স্থানীয় মেয়রের কার্যালয় প্রাঙ্গনে আশ্রয় নেয়।

৭ই জুলাই প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসকে হত্যা করার পরে রাষ্ট্র ক্ষমতা শূন্য অবস্থায় রয়েছে এবং এর মাঝে গ্যাংগুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং আরও অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করায় সহিংসতা এবং অপহরণ চরমভাবে বেড়ে গেছে।

এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হাইতিবাসীরা প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। স্বল্প অর্থায়ন এবং স্বল্প কর্মী সমন্বিত পুলিশ বাহিনীকে চাংগা করে তোলার জন্য এই প্রশাসন আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে রোববার থেকে একটি পরিবারের আট জন প্রাণহারায় যার মধ্যে ছয়জন শিশু রয়েছে। স্থানীয় মেয়রের কার্যালয়ের কাছে একটি পার্কে হাজার হাজার পরিবার তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁবু খাটিয়ে থাকার কারণে ওই এলাকার স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

জিন রেমন্ড ডরসেলি যিনি ছোট একটি তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন পরিচালনা করেন, তিনি বলেন, "এদের পানি, খাদ্য, অন্যান্য সরবরাহ প্রয়োজন" । এদের একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় চলে আসতে হয়েছিল।”

তিনি বলেন যে পাড়াটি সাধারণত শান্ত ছিল এবং তার শিশুরা ঐ পার্কে খেলতো। সেখানটা এখন এটি একটি অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সহিংসতায় নিহতদের পাশাপাশি দুই ডজন মানুষ আহত হয়েছে এবং একটি গুলি বিমানবন্দরের কাছে অবস্থানরত জাতিসংঘের হিউম্যানিটেরিয়ান এয়ার সার্ভিসের একটি খালি হেলিকপ্টারে আঘাত করেছে।

সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সি বলেছে, "আগামী দিনে এই সংঘাত আরও বাড়তে পারে, আর এর ফলে আরও লোক হতাহত এবং নতুন করে লোকজন অভিবাসন-প্রার্থী হবে।"

কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, লড়াই-এর কারণে হাইতির উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

[পর্টোরিকোর সান হুয়ানের অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের লেখক ড্যানিকা কোটো এই প্রতিবেদনের কিছু অংশ লিখেছেন।]