বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে যে, ইউক্রেনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা দুর্গতদের কাছে জরুরি চিকিৎসা সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।
রাশিয়া প্রায় দুই মাস আগে ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। তারপর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেশটিতে প্রায় ২১৮ মেট্রিক টন জরুরি চিকিৎসা সরবরাহ করেছে। এসবের মোটামুটি দুই-তৃতীয়াংশ তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছেছে। সাহায্যের বেশির ভাগই দেশের পূর্ব ও উত্তরে, যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেখানে পাঠানো হয়েছে।
ডব্লিউএইচও মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) লেভিভের গুদাম থেকে ১৫টি জেনারেটর এই সপ্তাহে সারা দেশের হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বের করেছে। লেভিভ থেকে ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র ভানু ভাটনাগর বলেছেন, এর মধ্যে তিনটি পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক এবং দোনেৎস্কে পাঠানো হবে। সেখানে তুমুল লড়াই চলছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্য জেনারেটরগুলো খারকিভের মতো জায়গাগুলো, যেগুলো রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে, সেগুলোর এবং অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলের জন্য রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“আমরা আমাদের কর্মীদের এবং পরিবহনকারী কার্গোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তবে জেনারেটরগুলোকে তাদের চূড়ান্ত গন্তব্যে নিয়ে যাব। এই জেনারেটরগুলো সুপারিশকৃত হাসপাতালের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার ইউনিটগুলোর ন্যূনতম শক্তির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে, যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় সীমিত বা একেবারেই নেই”, তিনি বলেন।
ভাটনাগর বলেছেন, একটি নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের উৎস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ক্ষণস্থায়ী বিদ্যুৎ ঘাটতি রোগীদের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনতে পারে। তিনি বলেছেন, এই বিপজ্জনক পরিবেশে সেবা প্রদান করা আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
তিনি বলেছেন, ডব্লিউএইচও এখন পর্যন্ত, স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসা কর্মীদের ওপর ১৪৭টি আক্রমণের প্রমাণ পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, অন্তত ৭৩ জন নিহত ও ৫২ জন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের আক্রমণ দুর্গতদের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মারিউপোল রুশ বাহিনীর ব্যাপক বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে। শহরটি ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আরও হাজার হাজার আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে।
ভাটনগর বলেছেন, ডব্লিউএইচও মারিউপোলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সবচেয়ে বিপর্যয়কর বলে আশঙ্কা করছে। তিনি বলেন, শহরে কারও প্রবেশাধিকার নেই। কিন্তু তিনি যোগ করেন যে, ডব্লিউএইচও কাছাকাছি এলাকায় জেনারেটর এবং অন্য সরবরাহ স্থাপন করেছে। যাতে করে যখনই প্রয়োজন তখনই জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারে।