সুনামগঞ্জের হাওরে আবার পানি বাড়ায় আতঙ্কে কৃষকেরা

সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় আবারও ফসল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঝুঁকিতে পড়েছে তাহিরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা, ছাতক ও জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরের বোরো ফসল।

স্থানীয়রা জানান, গত তিন দিন ধরে উজানের ঢলে হাওর এলাকায় পানি বেড়ে ফসল রক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে চাপ সৃষ্টি করছে। এ কারণে তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীর তীর উপচে শুরুতে গুরমার হাওরের বর্ধিতাংশে পানি প্রবেশ করে। পরে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারের পাশের বাঁধ পানির চাপে ভেঙে যায়। এতে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ও মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর এবং দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের বোরো ধান তলিয়ে গেছে।

এদিকে রবিবার (১৭ এপ্রিল) গভীর রাতে দিরাই উপজেলার হুরামন্দিরা হাওরে কাটাখালী নদীর ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৮৬০ হেক্টর জমির ফসল। এর ফলে আগাম বন্যার আতঙ্কে হাওরের কৃষকেরা আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন।

কৃষকেরা জানান, গত কয়েক দিন ধরে হাওরে পানির চাপ বেড়েছে। এতে বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে হাওরে। তাই জমির ধান কেটে নিচ্ছেন তারা।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, “সারা জেলায় দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত মাত্র ৫১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগাম বন্যার কারণে বাঁধ ভেঙে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ২৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন”।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, “সকাল থেকে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত কমে যাবে। উজানে আজ সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে পানি দ্রুতই কমে যাবে”।

এদিকে সুনামগঞ্জের পানি নেত্রকোণা জেলার হাওরে প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা।

সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “সুনামগঞ্জের হাওরের সব বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। পানির চাপে বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে”। এ কারণে দ্রুত হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “হাওরের বাঁধগুলোতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হচ্ছে। কারণ নদীর তীর উপচে হাওরে পানি প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে”।