চেকপয়েন্টগুলো দৃঢ় করা এবং শহর ও নগরগুলোতে টহল: ইউক্রেনের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সংরক্ষিত সেনারা সাধারণ বেসামরিক নাগরিক ও রাশিয়ান সেনাদের মাঝখানে শেষ প্রতিবন্ধক।
২ দশমিক ০৭ মিটার (৬ ফুট ৯ দশমিক ৫ ইঞ্চি) লম্বা এবং ছদ্মবেশী পোশাক পরিহিত, “বাফেলো”। মাথায় পরা মুখোশটিতে শুধুমাত্র চোখের কাছে দুটো ছিদ্র। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। রুশ হামলার সময় কাজ ছেড়ে তিনি সংরক্ষিত বাহিনীতে যোগ দেন।
২০ বছর বয়সী এই হাস্যোজ্জ্বল যুবক প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির সংরক্ষিত বাহিনীতে যোগদানের আহ্বানে সাড়া দেওয়া কয়েক হাজার সেনাদের মধ্যে একজন।
তাকে দেশটির পূর্ব দিকে দনবাস অঞ্চলের রাজধানী ক্র্যামাটর্স্ক থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত একটি গ্রামে স্যাটোহিরস্কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রণক্ষেত্র। সেখান থেকে বিকট বোমা হামলার শব্দ ভেসে আসে প্রতিদিন।
বিশেষ করে ইজিয়ুম শহরের চারপাশে যুদ্ধ চলছে। সেখানে রাশিয়ার সেনাদের বিজয় ক্র্যামাটর্স্কের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ খুলে দেবে।
“আপনি নিশ্চয় গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন”, বাফেলো এএফপিকে বলেন। “এবং কীভাবে আমাদের গ্রামগুলো পৃথিবীর থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে”।
সে গর্ব ভরে তার মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও দেখায় যাতে দেখা যায়, সে তার কমরেডদের সঙ্গে বরফের মধ্যে যুদ্ধের জন্য নিয়োজিত। তার হাতে কালাশনিকভ (একে-৪৭)।
তবে তার মিশনের মধ্যে স্থানীয় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং সাহায্য করাও অন্তর্ভুক্ত।
যুদ্ধের আগে স্যাটোহিরস্কে ৫ হাজার বাসিন্দা ছিলেন এবং গ্রামটি অর্থোডক্স আশ্রমের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখনো গ্রামটিতে যথেষ্টসংখ্যক বাসিন্দা রয়েছেন।
রাশিয়ানদের অগ্রযাত্রাকে ধীর করার জন্য এই অঞ্চলের অনেক সেতু ইউক্রেনীয়রা ধ্বংস করে দিয়েছেন, যেহেতু মস্কো দনবাস অঞ্চলে আক্রমণে মনোযোগ দিয়েছে।
স্যাটোহিরস্কের সেতুটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে, যদিও মাইনগুলো যেকোনো সময় এটি উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।
“সেতুটি ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা উভয়ের অধীনে রয়েছে”, বলেছেন ভলোদিমির রাইবালকিন। তিনি একজন বেসামরিক সাংবাদিক এবং শহরের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা প্রধান।
২০১৪-২০১৫ সালে দনবাস যুদ্ধের সময় আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার অনেক সদস্যের মতো, তারও ইতিমধ্যেই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ছিল।
মস্কোর ঘোষিত আগ্রাসন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, তাকে আত্মবিশ্বাসী বলে মনে হয়।
“সামনের রণক্ষেত্রটি ১০ কিলোমিটারেরও কম দূরে। আমাদের বাহিনী পূর্ণ শক্তিতে গুলি চালাচ্ছে এবং শত্রুকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে”, তিনি বলেছিলেন।
“আগামীকাল কী ঘটবে তা জানি না। আজ (রাশিয়ান) প্লেন ওড়েনি। আগামীকাল তারা ফিরে আসবে কি না আমরা জানি না। আমরা তাদের সমস্ত কাজের জবাব দেব”।
তার পেছনে, “বাফেলো” রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সম্বোধন করে স্লোগান দেন।
“ইউক্রেনের মহিমা!” তিনি চিৎকার করে বলেন।
“বীরত্বের মহিমা!” তার কমরেডরা জবাব দেয়।