রাশিয়ার সীমন্তবর্তী নেটো রাষ্ট্রগুলি পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও ইস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্টরা ইউক্রেনের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানানোর জন্য বুধবার কিয়েভ সফর করেন। ‘এর ঠিক একদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, “পরিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন “ না হ্ওয়া অবধি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ চালিয়ে যাবার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
এই চারটি দেশের নেতারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির সাথে বৈঠক করতে ট্রেনে করে ইউক্রেনের রাজধানীতে গেছেন। তাঁরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন যে মস্কোর কাছে ইউক্রেনের পতন হলে রাশিয়া তাদের ও আক্রমণ করতে পারে।
সফরকারি লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাওসেদা বলেন ইউক্রেন সফররত ইউরোপীয় নেতারা, “রাজনৈতিক সমর্থন ও সামরিক সহায়তা প্রদানের একটি শক্ত বার্তা” দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন । নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সম্পর্কে চলমান তদন্ত নিয়েও কথা বলবেন।
এদিকে, ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেন্সকি রাশিয়ান বাহিনীকে পরাস্ত করার জন্য আরও সাহায্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে, যুক্তরাষ্ট্র শীঘ্রই ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তার জন্য ৭৫ কোটি ডলার পর্যন্ত ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন কংগ্রেসনাল সহকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, চূড়ান্ত প্যাকেজটি এখনও আলোচনার অধীনে রয়েছে, এতে হাউইটজারসহ ভারী গ্রাউন্ড আর্টিলারি সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, এর আগের প্রতিশ্রুত ৩০ কোটি ডলার নিরাপত্তা সহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসাবে, ইউক্রেনীয় বাহিনী ১০০টি তথাকথিত সুইচব্লেড ড্রোনের "উল্লেখযোগ্য পরিমাণ" পেয়েছে, যেগুলো ট্যাঙ্ক-বাস্টিং ওয়ারহেড দিয়ে সজ্জিত।
আরও ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী জ্যাভলিন ক্ষেপনাস্ত্রসহ বাকী ড্রোনগুলি আগামী সপ্তাহে বা তার পরে ইউক্রেনে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মঙ্গলবার “রাশিয়ার চলমান নৃশংসতার মুখে ইউক্রেনে নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছেন”।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে "গণহত্যার" কারিগর হিসেবে অভিযুক্ত করে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বক্তৃতার ধার আরও বাড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পরে এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে চড়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করার তার সিদ্ধান্তকে পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাইডেন বারবার পুতিনের সমালোচনা করেছেন, এবং প্রকাশ্যে তাকে "যুদ্ধাপরাধী" বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া তিনি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের শহরতলী বুচাতে নৃশংসতার প্রমাণ পাওয়ার পর, পুতিনের বিচারও দাবি করেছেন।
ইউক্রেনের অস্ত্রের চাহিদা মেটাতে আলোচনার জন্য বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা ঠিকাদারদের প্রধানদের সাথে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে পেন্টাগন। সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্যাথলিন হিকস সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ওই আলোচনায় অংশ নেবেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে, পশ্চিমা এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা উত্তর ইউক্রেনের কিছু অংশ থেকে পশ্চাদপসরণকারী রুশ বাহিনী দ্বারা সংঘটিত নিয়মতান্ত্রিক নৃশংসতা এবং যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পেয়েছেন বলে অভিযোগ করে আসছেন।
রাশিয়ান কর্মকর্তারা ক্রমাগত এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন। এর পরিবর্তে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনকে রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতির জন্য অভিযুক্ত করেছেন।