জিম্মি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কায়লা মুলারের প্রতি আইএস নেতার আচরণ সম্পর্কে সাক্ষ্য দিলেন একজন ইয়াজিদি নারী

ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়ায় অ্যালবার্ট ভি. ব্রায়ান ফেডারেল কোর্টহাউস যেখানে আইএস সদস্য এল শাফি এলশেখ এর বিচার চলছে। ৫ এপ্রিল, ২০২২

একজন ইয়াজিদি তরুণী সোমবার সাক্ষ্য দিয়েছেন যে আমেরিকান ত্রাণ কর্মী কায়লা মুলার তাকে বলেছিলেন যে তিনি প্রাক্তন ইসলামিক স্টেট নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন এবং পালানোর চেষ্টা করলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

লিয়া মুল্লা, যিনি ২০১৪ সালের আগস্টে তার পরিবারের সাথে ইরাকের মাউন্ট সিনজার থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ইসলামিক স্টেট (আইএস) সদস্যদের হাতে বন্দী হন; তিনি সোমবার এল শাফি এলশেখের বিচারে একজন অনুবাদকের মাধ্যমে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আলেকজান্দ্রিয়া শেরিফের অফিস থেকে প্রদত্ত ছবিতে এল শাফি এলশেখকে দেখা যাচ্ছে। তিনি আলেকজান্দ্রিয়া অ্যাডাল্ট ডিটেনশন সেন্টারে হেফাজতে রয়েছেন, ৭ অক্টোবর, ২০২০, আলেকজান্দ্রিয়া, ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র

৩৩ বছর বয়সী প্রাক্তন ব্রিটিশ নাগরিক এলশেখকে "বিটলস" নামে পরিচিত কুখ্যাত আইএস অপহরণ-এবং-হত্যা সেলের সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে চারজন আমেরিকান হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে: মুলার, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জেমস ফোলি ও স্টিভেন সটলফ এবং পিটার ক্যাসিগ, ও আরেকজন ত্রাণকর্মী।

অ্যারিজোনার ত্রাণ কর্মী মুলার ২০১৩ সালের আগস্টে আইএসের হাতে ধরা পড়েছিল যখন আলেপ্পোর একটি হাসপাতালে তার সিরীয় প্রেমিকের সাথে বেড়াতে গিয়েছিল। যেখানে তার প্রেমিক একটি স্যাটেলাইট ডিশ মেরামতের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল।

প্রথমে তাকে "বিটলস" বন্দি করে কিন্তু তারপরে তাকে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর অভিযানের সময় মারা যাওয়া আইএস নেতা বাগদাদির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।

মুল্লা বলেন, বন্দী হওয়ার পর আইএস তাকে অন্যান্য তরুণীদের সাথে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।

অবশেষে, তাকে একটি কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে মুলারকে আটকে রাখা হয়েছিল।

সেখানে তারা বেশিরভাগ সময় হাত নাড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে কথা বলার চেষ্টা করতো এবং কিছু আরবী শব্দ ব্যবহার করতো।

মুল্লা বলেন, "একদিন তারা মুলারকে নিয়ে যায় এবং যখন তারা তাকে ফিরিয়ে আনে তখন সে সত্যিই ভীত ছিল, আইএস মুলারকে বলেছিল যে আইএস আমাদের বিয়ে করতে চায়, এবং আমরা যদি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি তারা আমাদের মেরে ফেলবে।"

কয়েক দিন পরে, মুল্লা বলেছিলেন যে তাকে মুলার এবং অন্য ইয়াজিদি মেয়ের সাথে আবু সায়াফের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আবু সায়াফ একজন শীর্ষ বাগদাদি লেফটেন্যান্ট। সেখানে আটককৃত নারীদের সাথে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়।

'নোংরা বাড়ি'

তিনি বলেন, সেখানে এক সপ্তাহ পর, তাদের "একটি নোংরা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যেখানে তারা অল্পবয়সী মেয়েদের নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল।"

তিনি বলেন, বাগদাদি একদিন রাতে এসে মুলারকে নিয়ে যায়।

মুল্লা বলেন, পরের দিন সকালে যখন মুলার ফিরে আসেন, "তাঁর মন খুব খারাপ ছিল, তিনি খুব নার্ভাস ছিলেন, তিনি কাঁদছিলেন," । "তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে যদি সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তবে তাকে মেরে ফেলা হবে।"

মুল্লা বলেন যে তিনি পালানোর চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং মুলারকে তার সাথে যোগ দিতে বলেছিলেন কিন্তু মুলার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

আইএস ২০১৫ সালে মুলারের মৃত্যু ঘোষণা করে এবং বলে যে তিনি জর্ডানের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। তবে এই দাবি যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়নি।