রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক “অ্যাডজাস্ট” করা কঠিন—পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন

বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে এবং ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে কেউ চাইলেও সম্পর্কটি “অ্যাডজাস্ট” (সামঞ্জস্য) করার চেষ্টা করা দেশটির পক্ষে “কঠিন”।

সোমবার (১২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাতিসংঘের পরবর্তী প্রস্তাবে অবস্থান নিয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং ৪ এপ্রিল দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে ছিলেন।

এ ছাড়া তিনি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত অষ্টম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

এ বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আলোচনা হয়েছে এবং বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার অবস্থান জানিয়েছে, যা এখনো বিস্তৃত ও ঘনিষ্ঠ।

তিনি আরও বলেন, “রূপপুর প্রকল্পের মতো অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের ওপর বাংলাদেশ নজর রাখবে, যা বাংলাদেশ সম্পূর্ণ করতে চায়”।

বাংলাদেশ সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও বৈচিত্রপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় বলেও তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনার চুক্তি করছে না বাংলাদেশ

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো অস্ত্র কিনতে যাচ্ছে না, বরং তার দেশ জনগণের কল্যাণে অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোযোগ দেবে।

তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে কোনো সংগ্রহ (অস্ত্র) সমস্যা নেই। আমাদের মূল লক্ষ্য হল অর্থনৈতিক উন্নয়ন”।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রস্তাবিত জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষর করার আগে এখনো পাঁচ-পর্যায়ের প্রক্রিয়ার তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ বড় ধরনের অস্ত্র ক্রয় করতে যাচ্ছে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই”।

তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যেকোনো সম্ভাব্য উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র কেনার জন্য জিসোমিয়া একটি পূর্বশর্ত। তবে বাংলাদেশ জাতীয় স্বার্থ বিশ্লেষণ করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এটি এমন কিছু নয় যা আমাদের এই মুহূর্তে সরঞ্জাম (প্রতিরক্ষা) সংগ্রহ করতে হবে”।

এ সপ্তাহে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব জানান, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের ঢাকা সফরের সময় জিসোমিয়া খসড়ার সর্বশেষ সংস্করণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে।