বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মন্ডল জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন

শিক্ষক হৃদয় মন্ডল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় জামিন পেয়ে মুন্সীগঞ্জ কারাগার থেকে রবিবার (১০ এপ্রিল) মুক্তি পেয়েছেন।

বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় মন্ডল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় জামিন পেয়ে মুন্সীগঞ্জ কারাগার থেকে রবিবার (১০ এপ্রিল) মুক্তি পেয়েছেন।

জেলার আবুল বাশার জানান, বিকেল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জ কারাগার থেকে হৃদয় মন্ডলকে ছাড়া হয়।

তিনি বলেন, “আমরা বিকেল ৪টার দিকে হৃদয় মন্ডলের জামিনের কাগজপত্র পেয়েছি”।

বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে গ্রেপ্তারের পর দেশ-বিদেশের অধিকার সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানায়। অধিকার সংগঠনগুলো তার গ্রেপ্তারকে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে খর্ব করার প্রচেষ্টা হিসাবে নিন্দা করেছে।

মুক্তির পর হৃদয় মন্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।

তিনি বলেন, “সেদিন ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াচ্ছিলাম। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে প্রশ্ন করছিল। আমি এমন কিছু বলিনি যা সমস্যা হতে পারে। আমি খেয়ালও করিনি যে, তারা মোবাইলে রেকর্ড করছে”।

তিনি বলেন, “কিছু বিপথগামী শিক্ষার্থী, যারা পড়াশোনা করে না, তারা বিপথগামী শিক্ষকদের সঙ্গে মিলে এটা করেছে। এই মুহূর্তে কারও নাম বলতে পারছি না। প্রাইভেট টিউশনির জন্য তারা হয়তো আমার সঙ্গে এটা করেছে”।

এ ছাড়া রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।

এর আগে এ মামলায় গ্রেপ্তারের ১৯ দিন পর ওই শিক্ষকের জামিন মঞ্জুর করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোতাহার আক্তার ভূঁইয়া।

হৃদয় মন্ডল বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক। ওই বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান আসাদ মিয়া তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সদর থানায় অভিযোগ করার পর তাকে ২২ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে হৃদয় মন্ডলের স্ত্রী ববিতা হালদার দাবি করেছেন, কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে শত্রুতার জের ধরে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০ মার্চ বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের (বিজ্ঞান বিভাগ) দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান ও ধর্মের ওপর হৃদয় মন্ডলের একটি ক্লাসের কথোপকথন রেকর্ড করে।

২২ মার্চ কয়েকজন শিক্ষার্থী তার শাস্তির দাবিতে স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ করে। পরবর্তীতে ওই স্কুলের এক অফিস সহকারী (ইলেকট্রিশিয়ান) তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।