নারায়ণগঞ্জে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ রিয়াজুলসহ গ্রেপ্তার ৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও উপজেলা থেকে ১৫টি মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলাম ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা।

তারা হলেন- রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শুটার রিয়াজ (২২), তার সহযোগী মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে কালা ভাগিনা (২৩), মারুফ হোসেন মুন্না (২৩), মো. সেলিম (২৩) ও মো.মাহবুব মিয়া (২৩)।

বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজার র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বুধবার রাতে রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও উপজেলায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-৩-এর একটি দল তাদের আটক করে।

অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, ১২ রাউন্ড গুলি, পাঁচটি ধারালো দেশীয় অস্ত্র, একটি মোটরসাইকেল ও ৬০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও আশপাশের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় তারা ওইসব অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এই সন্ত্রাস গ্রুপে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, রিয়াজ হত্যাসহ ১৫টি মামলার আসামি।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এবং বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদও রয়েছেন। এরইমধ্যে তার আমেরিকান ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটেলিয়ান (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুন্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোন কোন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।