ইসলামাবাদ — আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে থাকা প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যূত করতে পাকিস্তানের সংসদে বিরোধীদল উত্থাপিত অনাস্থা ভোটে বাধা দেওয়া দেশটির সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা, তা নিয়ে রায় দিতে বুধবার কোনরকম সিদ্ধান্ত না নিয়েই বিচার প্রক্রিয়া মূলতবি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালের নেতৃত্বে সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচজন বিচারকের প্যানেল বৃহস্পতিবার পুনরায় মিলিত হবে এবং সম্ভবত শুনানি শেষে তারা রায় ঘোষণা করবে।
৩৪২-সদস্যের জাতীয় পরিষদ বা সংসদের নিম্নকক্ষে রবিবারের বিশেষ অধিবেশন থেকে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, যেখানে আইন প্রণেতারা একটি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন ভোট দেওয়ার জন্য। ওই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।
৬৯ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খানের ক্ষমতাসীন দলের প্রায় দুই ডজন আইন প্রণেতা দলত্যাগ করার পর এবং বিরোধী দলে যোগ দিতে জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিকরা সরকার থেকে পদত্যাগ করার পর তিনি সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলেন।
তবে, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য এবং সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম শাহ সুরি, ওই অনাস্থা প্রস্তাবকে শেষ পর্যন্ত অবরুদ্ধ করতে সক্ষম হন। তিনি পাকিস্তান সরকারের পতনের জন্য একটি "বিদেশী শক্তি" দ্বারা পৃষ্ঠপোষকতার জন্য এটিকে বেআইনি বলে অভিহিত করেন।
বিরোধী আইন প্রণেতাদের তীব্র প্রতিবাদের মধ্যে সুরি তার রায় ঘোষণা করার পর পরই অধিবেশনটি স্থগিত করেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি, ইমরান খানের পরামর্শে দ্রুতই, সংসদ ভেঙে দেন এবং সংবিধানের বিধান উল্লেখ করে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানান।
বিতর্কিত পদক্ষেপগুলি ২২ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত পারমাণবিক ক্ষমতাধর দক্ষিণ এশীয় দেশটিকে একটি রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ফেলে দেয় এবং সুপ্রিম কোর্টকে তাদের বৈধতা নির্ধারণের জন্য অবিলম্বে একটি শুনানি শুরু করার জন্য বাধ্য করে।
ইমরান খান বারবার অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সাম্প্রতিক রাশিয়া সফরের জন্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নিন্দায় পশ্চিমাদের সমর্থন না করার জন্য তাকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার সরকারকে পতনের জন্য বিরোধীদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
তবে পাকিস্তানি বিরোধী নেতারা খানের এই অভিযোগগুলোকে উপহাস করেছেন এবং অন্যদিকে, ওয়াশিংটনও কঠোরভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।