মালির বাহিনী ও সন্দেহভাজন রুশ যোদ্ধারা ৩০০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে—মানবাধিকার সংগঠনের দাবি

ফাইল ছবি: মালির একজন সেনা মালিতে টহল দিচ্ছে। ২০ অক্টোবর ২০১৭

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) জানিয়েছে, সংঘাত-বিধ্বস্ত সাহেল দেশটির কেন্দ্রে মার্চের শেষের দিকে মালির বাহিনী ও সন্দেহভাজন রাশিয়ান যোদ্ধারা প্রায় ৩০০ বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে।

একটি প্রতিবেদনে, মানবাধিকার সংগঠনটি বলেছে, অস্থিতিশীল মধ্য মালির মৌরা শহরে চার দিন ধরে সংঘটিত কথিত গণহত্যা একটি যুদ্ধাপরাধ।

মালির সেনা ও শ্বেতাঙ্গ বিদেশি যোদ্ধারা ২৭ মার্চ হেলিকপ্টারে করে শহরে আসে এবং প্রায় ৩০ জন জিহাদির সঙ্গে গুলি বিনিময় করে। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছেন। কিছু জিহাদি তখন স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে।

পরে মালির সেনা ও বিদেশি যোদ্ধারা বেসামরিক লোকদের এক জায়গায় দাঁড় করায় এবং ছোট ছোট দলে তাদের হত্যা করে।

এইচআরডব্লিউ ধারণা করছে, মোট প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। যার অধিকাংশই ফুলানিস জনগোষ্ঠীর।

“ঘটনাটি মালির দশকব্যাপী সশস্ত্র সংঘাতে সবচেয়ে খারাপ নৃশংসতা”, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

মালির সেনাবাহিনী শুক্রবার বলেছে যে, তারা মৌরাতে ২০৩ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। যাহোক, এই ঘোষণাটি এলাকায় একটি বেসামরিক গণহত্যার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া প্রতিবেদনের সঙ্গে মিলে যায়।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ ও মালির প্রাক্তন ঔপনিবেশিক ফ্রান্স, সবাই মৌরাতে বেসামরিক নাগরিকদের সম্ভাব্য হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এএফপি মালির সশস্ত্র বাহিনীর বক্তব্য বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ঘটনা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

এইচআরডব্লিউয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অবশ্য মৌরাতে ব্যাপক বেসামরিক হত্যার আশঙ্কার প্রমাণ দেয়।

সমীক্ষাটি মৌরা এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী, বিদেশি কূটনীতিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকসহ ২৭ জনের সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে করা হয় বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী এবং অন্য সূত্র এইচআরডব্লিউর কাছে বিদেশি সেনাদের রাশিয়ান বলে শনাক্ত করেছে।

মালি ২০১২ সাল থেকে একটি নির্মম জিহাদি সংঘাতের সঙ্গে লড়াই করছে। রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে, তারা দেশটিতে সামরিক প্রশিক্ষক সরবরাহ করেছে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও অন্যরা বলেছে যে, প্রশিক্ষকেরা রাশিয়ান প্রাইভেট-সিকিউরিটি ফার্ম ওয়াগনারের অপারেটিভ।

মালির ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনী, যারা আগস্ট ২০২০ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, মালির সেনাবাহিনী বলেছে, সেনারা একদল “সন্ত্রাসীকে” আক্রমণ করে এবং তাদের সঙ্গে ভারী লড়াইয়ে লিপ্ত হয়।