রমজান শুরু হওয়া মাত্র সব পক্ষ ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের প্রতি অনুগত বাহিনী তাদের দেশে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হস্তক্ষেপের সপ্তম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩১ মার্চ (২০২২) রাজধানী সানায় এক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। ইয়েমেনের যুদ্ধরত পক্ষগুলো দুই মাসের যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে বলে জানা গেছে

জাতিসংঘ শুক্রবার (১ এপ্রিল) ঘোষণা করেছে যে, ইয়েমেনে সংঘাতরত পক্ষগুলো শনিবার পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিন, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা থেকে দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেছেন, “এই যুদ্ধবিরতি অবশ্যই ইয়েমেনের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের অবসানের প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে”।

তিনি সব পক্ষকে আবারও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সর্ব ব্যাপী ইয়েমেনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তার বিশেষ দূতের সঙ্গে মিলে “সর্ববিশ্বাসে এবং কোনোরকম পূর্বশর্ত ছাড়াই” এই সুযোগটি কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

সহিংসতা স্থগিত

জাতিসংঘের বিশেষ দূত হ্যান্স গ্রান্ডবার্গ, যিনি যুদ্ধবিরতির আলোচনা পরিচালনা করেছিলেন, এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, পক্ষগুলো ইয়েমেনের অভ্যন্তরে এবং এর সীমানায় সমস্ত সামরিক বিমান, স্থল ও সামুদ্রিক অভিযান বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “তারা হোদেইদা বন্দরে প্রবেশের জন্য জ্বালানিবাহী জাহাজ এবং সানা বিমানবন্দর থেকে পূর্বনির্ধারিত গন্তব্যে বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো চলাচলে সম্মত হয়েছে”। “তারা তাইজ এবং ইয়েমেনের অন্য গভর্নর শাসিত অঞ্চলের রাস্তাগুলো খুলে দিতে আমার পৃষ্ঠপোষকতায় সাক্ষাত করতে সম্মত হয়েছে”।

হুথিরা এই সপ্তাহের শুরুতে ইয়েমেনে যুদ্ধের বিষয়ে একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আঞ্চলিক উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে। কারণ হিসেবে তারা বলে, বৈঠকটি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হুথিরা একটি নিরপেক্ষ দেশ বেছে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে।

সৌদি ও হুথি, উভয়ই সম্প্রতি তাদের নিজস্ব একতরফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে।

বিশেষ দূত গত সপ্তাহে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এবং ওমানের মাস্কাটে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে রমজানে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ত্বরান্বিত করেছেন।

গ্রানবার্গ বলেছেন, দলগুলো সম্মত হলে যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ানো যেতে পারে।

যুদ্ধ দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে এবং ২৩ মিলিয়নেরও বেশি ইয়েমেনিকে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে। জাতিসংঘ বলেছে যে, তাদের মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ জুনের মধ্যে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে আরও লক্ষাধিক মানুষ একই পথে এগোচ্ছেন বলে জানায় জাতিসংঘ।