রাশিয়ার সঙ্গে নতুন আলোচনায় সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ইউক্রেন

ইউক্রেনে রাশিয়ার অব্যাহত আক্রমণের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ইউক্রেনের কিয়েভ থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে দোহা ফোরামের অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন। ২৬ মার্চ ২০২২।

রাশিয়ার সঙ্গে নতুন শান্তি আলোচনার ঠিক আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেন, তার দেশের “সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা” তার প্রথম অগ্রাধিকার।

“আমরা আর বিলম্ব না করে শান্তি চাচ্ছি”, জেলেন্সকি রবিবারের (২৭ মার্চ) শেষার্ধে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন। “তুরস্কে মুখোমুখি বৈঠকের একটি সুযোগ ও প্রয়োজন রয়েছে। এটা খারাপ না। দেখা যাক ফলাফল কী হয়”।

এর আগে রবিবার রাশিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে কলে জেলেন্সকি বলেন, ইউক্রেন শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে একটি নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের জন্য প্রস্তুত আছে। তবে তা যদি তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় এবং গণভোটের মাধ্যমে হয়।

রয়টার্স জেলেন্সকির একজন সহযোগীকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, তুরস্ক এমন দেশগুলোর মধ্যে একটি, যারা নিরাপত্তা ইস্যুতে ইউক্রেনের জন্য গ্যারান্টার হতে পারে।

তুরস্ক অচিরেই একটি আলোচনার আয়োজন করতে যাচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান রবিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এরদোগানের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তিনি এই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি এবং আরও মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

জাতিসংঘ বলেছে যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ১ কোটি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৩৮ লাখেরও বেশি।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সোমবার (২৮ মার্চ) বলেছে যে, গত কিছুদিনে “অধিকৃত ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর আচরণে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি” এবং রুশ বাহিনী গতি ও মনোবলের অভাবের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তারা আরও বলেছে, দক্ষিণের শহর মারিউপোল, যেখানে রাশিয়া সবচেয়ে বেশি সফলতা অর্জন করেছিল, “রাশিয়া বন্দর দখল করার চেষ্টা করায়” এখনো ভারী লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রবিবার জোর দিয়ে বলেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উৎখাত করা বাইডেন প্রশাসনের নীতি নয়।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়ারশতে এক বক্তৃতায় পুতিন “ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না” বলার একদিন পর ব্লিংকেন এই মন্তব্য করেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রয়টার্সকে বলেছেন, “এটি বাইডেনের সিদ্ধান্তে হবে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট রাশিয়ানদের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রবিবার ফ্রান্স-৩ টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, “আমি এই ধরনের শব্দচয়ন করব না, কারণ আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি”।

নেটোতে যুক্তরাষ্ট্রের দূত জুলিয়ান স্মিথ সিএনএনের “স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন”-কে বলেছেন, শত শত ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের সঙ্গে সময় কাটানোর পর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাইডেন এই মন্তব্য করেন”।

“এই মুহুর্তে আমি মনে করি যে, তিনি সেদিন যেসব ঘটনা সম্পর্কে শুনেছিলেন তারই নীতিগত মানবিক প্রতিক্রিয়া ছিল মন্তব্যটি”, স্মিথ বলেন। “কিন্তু না... রাশিয়ায় শাসন পরিবর্তনের নীতি যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ব্যস”।

[এই প্রতিবেদনের জন্য কিছু তথ্য দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেস ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে]