দোহা ফোরামে ভিডিওর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ভিডিওর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে দোহা ফোরামে বক্তব্য রাখছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি, ২৬ মার্চ ২০২২, (ইউক্রেনিয়ান প্রেসিডেন্সিয়াল প্রেস সার্ভিস/রয়টার্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবি)

কাতারের দোহা ফোরামে শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি অপ্রত্যাশিতভাবে ভিডিও’র মাধ্যমে সংযুক্ত হন। সেখানে তিনি জ্বালানীসমৃদ্ধ দেশ কাতার ও অন্যান্যদের প্রতি তাদের জ্বালানী উত্তোলন বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান, যাতে করে রাশিয়ার হ্রাসকৃত জ্বালানী সরবরাহের ক্ষতিটি পূরণ করা যায়।

জাতিসংঘ ও বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতি তার সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ভলোদিমির জেলেন্সকি। ২৪ ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধটি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী তার বিভিন্ন ভাষণে তিনি ঠিক একইভাবেই সহায়তা চেয়ে আসছেন। বন্দরনগরী মারিউপোলে রাশিয়ার ধ্বংসযজ্ঞটির সাথে তিনি সিরিয়া যুদ্ধ চলাকালীন আলেপ্পো শহরে সিরিয়া ও রাশিয়ার ধ্বংসযজ্ঞটির তুলনা করেন।

“তারা আমাদের বন্দরগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে” বলে জেলেন্সকি আরও বলেন, “ইউক্রেন থেকে রফতানীর অভাব বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশকেই আঘাত করবে”।

ইউক্রেন থেকে গম না পাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যেই মিশরের মত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে ভাবিয়ে তুলেছে। সেই দেশগুলো এই সব রফতানীর উপর নির্ভরশীল।

জেলেন্সকি দেশগুলোর প্রতি তাদের জ্বালানী রফতানী বৃদ্ধি করারও আহ্বান জানান। এই বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রাকৃতিক গ্যাসের রফতানীতে কাতার বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার রফতানী ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর জন্য রাশিয়ার রফতানী পণ্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বে সর্বাধিক জ্বালানী তেল রফতানীকারক এই দেশটির সর্বোচ্চ কূটনীতিক তিনি। এখনও পর্যন্ত সৌদি আরব বলে আসছে যে, রাশিয়া ও অন্যান্য উৎপাদনকারী দেশের সম্মতিতে নির্ধারিত, ওপেক প্লাস সংগঠনের উৎপাদন সূচি অনুযায়ীই তারা জ্বালানী উৎপাদন করবে। দেশটি এও জানায় যে, জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য তারা দায়ী থাকবে না। এক বছর ধরে চলমান ইয়েমেনের সাথে তাদের যুদ্ধটির মধ্যে, তাদেরকে আরব বিশ্বের দরিদ্রতম এই দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের হামলাগুলো মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

জেলেন্সকি, তার ভাষ্যমতে, বিশ্বকে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র দ্বারা হুমকি দেওয়ার জন্যও রাশিয়ার প্রতি নিন্দা জানান। এমন হুমকির ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

তিনি এই বিষয়টিও উল্লেখ করেন যে, ইউক্রেনের মুসলমানদের আসন্ন পবিত্র রমজান মাসের রোজার মধ্যেও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।