পাকিস্তানের সরকার সোমবার (২১ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের কাছে পরামর্শ চেয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষমতাসীন দল যারা ত্যাগ করেছেন তাদের আজীবন অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে কি না। ইমরান খানের বিরুদ্ধে ডাকা একটি অনাস্থা ভোটের আগে একাধিক নেতা তার দল ত্যাগ করেছেন। যা তার ক্ষমতা ধরে রাখার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে।
বিরোধী দলগুলোর দাখিল করা প্রস্তাবটি শুক্রবার পার্লামেন্টে উত্থাপিত হবে। এই প্রস্তাবের কারণে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটি সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, যেটা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করার পর অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, সরকার পরামর্শ চেয়েছে যে, যে সকল আইনপ্রণেতারা তাদের দল ত্যাগ করবেন এবং দল পরিবর্তন করবেন কেন তাদের আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা যাবে না।
“মৌলিক প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে... ভিন্নমতাবলম্বী এমপিদের কি আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হবে, .... সেই এমপিদের ভোটের তাৎপর্য কী হবে এবং এই এমপিদের ভোট গণনা করা হবে কি না”, খান বলেন।
বিরোধীরা অর্থনীতি ও শাসনতন্ত্রের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান।
পাকিস্তানের দলত্যাগবিষয়ক (ফ্লোর-ক্রসিং) আইনে বলা আছে সংসদ সদস্যরা (এমপি) তাদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তারা তাদের আসন হারাতে পারেন। ইমরান খানের উপদেষ্টারা বলেছেন যে, তারা চান দলত্যাগী আইনপ্রণেতাদের ভোটের আগেই দেশের শীর্ষ আদালত আইনটি প্রযোজ্য হয় কি না তা ব্যাখ্যা করুক।
ইমরান খানের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন। এরফলে প্রাক্তন এই ক্রিকেট তারকা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। জোটের অংশীদারেরা সতর্ক করেছেন যে, তারা বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন।
দলত্যাগী আইনপ্রণেতাদের হারানোর ফলে ইমরান খানের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ১৭২ আসনের চেয়ে ডজনেরও বেশি আসন কম রয়েছে।
বিরোধী দল যৌথভাবে নিম্নকক্ষে ১৬৩টি আসন দখল করে আছে। কিন্তু অধিকাংশ দলত্যাগী নেতারা অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে কার্যকরভাবে তাদের সঙ্গে যোগ দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে ইমরান খান দলত্যাগীদের ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলে ফিরে আসার আবেদন জানিয়েছেন।
বিরোধী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলেছেন যে, পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের গুরুতর মতপার্থক্য রয়েছে। উল্লেখ্য যে, কোনো দলের জন্য ক্ষমতা সুরক্ষিত করতে সামরিক বাহিনীর সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ।
ইমরান খান ও সামরিক বাহিনী উভয়েই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।