সৌদি আরামকো বলেছে, ২০২১ সালে বার্ষিক মুনাফা দ্বিগুণেরও বেশি

উত্তর জেদ্দার একটি তেল মজুদের প্লান্টের সামনে লাইন ধরে আছে তেলের ট্রাক। (ফাইল ছবি- এপি)

রিয়াদ, সৌদি আরব—অতিমারির মন্দা থেকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এর মধ্যে জ্বালানিবিষয়ক জায়ান্ট সৌদি আরামকো রবিবার (২০ মার্চ) বলেছে, অশোধিত তেলের মুল্য বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা ২০২১ সালে ১২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবে আরামকোর স্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ করে আন্তসীমান্ত সশস্ত্র ড্রোন হামলা চালানোর কয়েক ঘন্টা পরে এই ঘোষণা আসে। হুথি ব্রিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব একটি সামরিক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

আরামকো হলো সৌদি আরবের সোনার ডিম দেওয়া হাঁস। প্রতিষ্ঠানটি হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না তা জানায়নি।

“আরামকোর নিট আয় ২০২০ সালে ৪৯ বিলিয়ন ডলার থেকে ১২৪ শতাংশ বেড়ে ২০২১ সালে ১১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে”, প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে বলেছে।

২০১৯ সালে করোনাভাইরাস মহামারি বৈশ্বিক বাজারে আঘাত হানার আগে আরামকোর নিট আয় ছিল ৮৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ সময় কোভিড সংক্রমণের ফলে তেল ও বিমান খাতের বিশাল ক্ষতি হয়।

তেলের দাম বাড়ায় গত বছর ২০২০ সালের ঘাটতি থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বিশ্ব। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী সরবরাহের ঘাটতি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে এ বছর তেলের দাম ব্যপক বৃদ্ধি পায়। বিশ্ববাজারে ২০১৪ সাল থেকে এত মুল্যবৃদ্ধি আর দেখা যায়নি।

আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও সিইও আমিন নাসের এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের শক্তিশালী অর্জনের মুলে রয়েছে, আমাদের আর্থিক শৃঙ্খলা, সদা পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নমনীয়তা এবং আমাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির কৌশলের ওপর প্রগাঢ় মনোযোগ”।

“যদিও অর্থনৈতিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে, তবে বিভিন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে”, তিনি বলেন।

২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সৌদি আরব তার তেল-প্রধান অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে।

বিশ্বের শীর্ষ অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারকদের মধ্যে আরামকো একটি। সৌদি আরব ফেব্রুয়ারিতে আরামকোর শেয়ারের ৪ শতাংশ, যার মূল্যমান ৮০ বিলিয়ন ডলার, দেশটির সার্বভৌম সম্পদ তহবিলে স্থানান্তর করেছে।

যুবরাজ গত বছর বলেন, আরামকো একটি বিদেশি জ্বালানিবিষয়ক জায়ান্টের কাছে এক শতাংশ শেয়ার বিক্রি করার জন্য আলোচনা করছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে ব্রেন্ট ক্রুড বর্তমানে ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম গ্যাস উৎপাদক এবং বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটি বর্তমানে ক্রমবর্ধমান পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে লড়াই করছে৷