মুম্বাই—জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জানিয়েছেন, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন “আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার ভিত্তিকে” নাড়িয়ে দিয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন।
ভারত ও জাপান চতুর্দেশীয় নিরাপত্তা জোট কোয়াডের অন্তর্ভুক্ত। কোয়াডের বাকি দুই সদস্য হলো যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। চার দেশের মধ্যে ভারতই একমাত্র কোয়াড সদস্য, যারা ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের নিন্দা জানায়নি।
রাশিয়া ইউক্রেনে “বিশেষ সামরিক অভিযান” শুরু করার পর থেকে জাপান কয়েক ডজন রুশ ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের গ্রহণ করেছে।
“আমরা (কিশিদা ও মোদি) নিশ্চিত করেছি যে, কোনো অঞ্চলে বলপ্রয়োগ করে স্থিতাবস্থার বিনষ্টকারীকে ক্ষমা করা যাবে না, এবং আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজা জরুরি”, কিশিদা নয়াদিল্লিতে মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পরে সাংবাদিকদের বলেন।
কিশিদা পাঁচ বছরে ভারতে পাঁচ ট্রিলিয়ন ইয়েন (৪২ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছেন। ভারত মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে বৈদ্যুতিক যান ও ব্যাটারি তৈরির জন্য জাপানের সুজুকি মোটর ইউনিটের সঙ্গে প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিতে একটি যানবাহন স্ক্র্যাপেজ স্কিমও অন্তর্ভুক্ত, তবে এটি মোট পাঁচ ট্রিলিয়ন ইয়েনের অংশ কি না তা স্পষ্ট নয়।
নেতারা ইউক্রেনের সংঘাত এবং সেখানে মানবিক সংকটের বিষয়ে তাদের গুরুত্ব ব্যক্ত করেন। মোদি ইউক্রেনের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত ছিলেন। তবে উল্লেখ করেছেন যে, ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলি “নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে”।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেছেন যে, দুই নেতা “বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য যুদ্ধের বিস্তৃত প্রভাব মূল্যায়ন করেছেন। তারা ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনার নিরাপত্তার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন”।
ভারতে জাপানি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে মূলত অটোমোবাইল, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, টেলিযোগাযোগ, রাসায়নিক এবং ওষুধ খাতে। ২০০০ সাল থেকে ভারতে জাপান প্রায় ২৭ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।