নেটো’র 'বিশেষ' সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলস যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে বেতন সমতা দিবস এবং উইমেন হিস্ট্রি মান্থ উদযাপনের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ১৫ মার্চ, ২০২২।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী সপ্তাহে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে যাচ্ছেন। রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন আক্রমণ করার এক মাস পর, আগামী ২৪শে মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নেটো’র একটি "বিশেষ" শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বাইডেন।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি বাইডেনের ব্রাসেলস সফরের পরিকল্পনা ঘোষণা করার কয়েক ঘন্টা পর, নেটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে, এক টুইট বার্তায় বলেছেন, জোটের সদস্যরা "ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ, ইউক্রেনের প্রতি আমাদের দৃঢ় সমর্থন এবং নেটোর প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।"

মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ার বোমা হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আগুন ধরে যায় এবং এতে চারজন মারা যায়। আগুনের ভয়াবহতা এতোই বেশী ছিল যে, ক্ষিপ্র গতিতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়ে যায় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো মঙ্গলবার রাত থেকে পরবর্তী ৩৫ ঘন্টার জন্য শহরে কারফিউ ঘোষণা করেছেন।

অন্যদিকে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে কিয়েভের উপর রাশিয়ান বাহিনীর উপুর্যপুরি আক্রমণ এবং অন্যান্য শহরগুলিতে বোমাবর্ষণের মধ্যে তিনজন ইউরোপীয় নেতা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানাতে রাজধানী কিয়েভ সফর করেন।

সফরকারী নেতাদের মধ্যে চেক প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি এবং প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহালের সাথে বৈঠকে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্ব করতে, পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি এবং স্লোভেনীয় প্রধানমন্ত্রী জেনেজ জানসার সাথে মঙ্গলবার কিয়েভে গেছেন।

ফিয়ালা বলেন, “এই সফরের উদ্দেশ্য ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার জন্য সমগ্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন নিশ্চিত করা। এছাড়া, ইউক্রেন এবং ইউক্রেনীয়দের সমর্থনে একটি বিস্তৃত প্যাকেজ উপস্থাপন করা”।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন দফায় আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যার মধ্যে, কিছু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির সাথে লেনদেনের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং রাশিয়ার জ্বালানি খাতে নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি লোহা, ইস্পাত এবং বিলাসবহুল পণ্যের উপর কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং আরও এক ডজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার তাদের দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে রাশিয়া মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে।

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের আলোচকরা সোমবারের বৈঠকের পর, মঙ্গলবার আবার আলোচনা শুরু করেন। আগের সেশনের মতো প্রতিবেশী বেলারুশে সশরীরে উপস্থিত না হয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকে অগ্রগতির বড় কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।

মঙ্গলবার, ইউক্রেনের সংসদ আগামী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটির জরুরি অবস্থা আরও এক মাসের জন্য বাড়ানোর পক্ষে ভোট দিয়েছে। এছাড়া ১৮ থেকে ৬০ বছরের পুরুষদের দেশ ত্যাগ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যাতে তাদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য ডাকা যেতে পারে।

জাতিসংঘ মঙ্গলবার বলেছে, আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৩০ লাখে পৌঁছেছে।

[এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে]