তালিবান ইসলামি আইনের অধীনে নারীর অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে

আফগানিস্তানের শক্তিশালী নারী আন্দোলনের সদস্যরা কাবুলের জামহুরিয়াত হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়েছিল, যখন তালেবান কর্মকর্তারা তাদের রক্ত দিতে নিষেধ করেছিলেন। ৮ মার্চ,২০২২, ছবি - ওয়াকিল কোহসার / এএফপি

তালিবান মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইসলামি আইনের অধীনে আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যদিও প্রায় সাত মাস আগে ইসলামপন্থী গোষ্ঠী দেশটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার পর থেকে সমালোচকরা মানবাধিকারের অবক্ষয়কে নিন্দা করেছেন।

তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, “ইসলামি আমিরাত আফগান নারীদের শরিয়া অধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”। কট্টরপন্থী গোষ্ঠীটি কাবুলে তাদের অন্তর্বর্তী সরকারকে ইসলামি আমিরাত বলে থাকে।

তিনি আরো বলেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবস আমাদের আফগান নারীদের জন্য ন্যায্য অধিকার দাবি করার একটি বড় সুযোগ। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা আমাদের আফগান নারীদের অধিকার রক্ষা করি।”

তালিবান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে শাসন করার সময় অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে নারীদের শিক্ষা ও কাজ নিষিদ্ধ করেছিল, যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।

আগস্টে পশ্চিমা-সমর্থিত আফগান সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে দলটি একটি সংস্কারিত চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। তালিবান নেতারা বারবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করেছেন যে তারা নারীদের অধিকারকে সম্মান করবেন এবং তাদের শিক্ষার পাশাপাশি কাজের সুযোগ দেবেন।

কিন্তু অধিকার গোষ্ঠীগুলো তালিবানের দাবি প্রত্যাখ্যান করে এবং গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার, বিশেষ করে নারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অভিযোগ তোলে। তারা বলে যে শুধুমাত্র পুরুষদের বিদ্রোহ থেকে সৃষ্ট এই সরকার নারীদের চলাফেরার স্বাধীনতাকে বিচূর্ণ করা সহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

হিউমান রাইটস ওয়াচ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জারি করা একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে যে আফগানিস্তানে নারীদের পুরুষদের সাথে যানবাহনে চড়ার বা ঘনিষ্ঠ পুরুষ আত্মীয় ছাড়া দীর্ঘ ভ্রমণের অনুমতি নেই। ট্যাক্সি চালকদের বলা হয়েছে যে মহিলা যাত্রীরা হিজাব পরেন না তাদের না নিতে। বেশিরভাগ আফগান মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং মহিলাদের বেশিরভাগ বেতনযুক্ত চাকরি থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ মঙ্গলবার বলেছে যে লিঙ্গ বৈষম্য এবং সামাজিক বৈষম্যের কারণে, আফগানিস্তানের নারীরা সংঘাত, খরা এবং ধসে পড়া অর্থনীতি দ্বারা "অনানুপাতিকভাবে" প্রভাবিত।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশনের প্রধান ডেবোরা লায়ন্স দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, "দেশের প্রত্যেকেই বর্তমান সংকট দ্বারা প্রভাবিত, কিন্তু নারী ও মেয়েদের পরিস্থিতি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক কারণ তাদের অধিকার এবং সুযোগগুলির নাগাল পাওয়া ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।"