যুদ্ধের জন্য নিজ দেশেই ডিজিটাল দুনিয়ার দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে রাশিয়া

রাশিয়ার ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেওয়াটা, তথ্যের উৎস থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলার বৃহত্তর প্রচেষ্টার একটি লক্ষণ বলে, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এমন তথ্য আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত ইউক্রেনে তাদের আক্রমণটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

প্রায়ই সমালোচিত সামাজিক মাধ্যম একটি তথ্যসুত্রের বৈদ্যূতিন নেটওয়ার্কের অংশ। ইউক্রেনে আক্রমণটি যে ন্যায়সঙ্গত ও প্রয়োজনীয় – ক্রেমলিনের এমন একপেশে দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টির উপস্থাপনাকে এই সামাজিক মাধ্যম চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে।

শুক্রবারে ফেসবুক নিষিদ্ধ করে দেওয়া এবং টুইটার ব্যবহার সীমিত করার ঘটনাটি সেই একই দিনে ঘটে, যেদিন সামরিক বাহিনী নিয়ে “মিথ্যা তথ্য” প্রকাশকারী গণমাধ্যমের কারাদন্ডের প্রতি সমর্থন জানায় রাশিয়া।

কার্নেগী এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস এর জ্যেষ্ঠ্য ফেলো, স্টিভেন ফেল্ডস্টাইন বলেন যে, রাশিয়ার উদ্দেশ্য হল “পুতিন এবং শাসকগোষ্ঠীর জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো দমন করা, যখন কিনা তাদের এমন কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে যে রাশিয়া কেন এখনও এই যুদ্ধটি চালিয়ে যাচ্ছে।”

সুতরাং চীন এবং উত্তর কোরিয়ার মত খুবই অল্প কিছু সংখ্যক এমন দেশের তালিকায় রাশিয়াও যুক্ত হল, যারা কিনা পৃথিবীর বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যমটি নিজ দেশে বন্ধ করে রেখেছে।

ফেল্ডস্টাইন আরও বলেন, “এটি সেন্সর প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা। সাধারণত যা তারা করে তেমন ভাবে কোন পেইজ বন্ধ না করে বা তাদের অন্যান্য চিরাচরিত কৌশলগুলো ব্যবহার না করে বরং তারা সমগ্র প্ল্যাটফর্মটিকেই নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে।”

ওয়েব পর্যবেক্ষক দল নেটব্লকস জানায় যে, সামাজিক মাধ্যম কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার এমন পদক্ষেপগুলো বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হল, “যেগুলো সামাজিক মাধ্যম এবং ম্যাসেজিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সমন্বয় ও সঞ্চালনা করা হয়।”

এ দিকে যুদ্ধটি এমন সময়ে সংঘটিত হচ্ছে যখন কিনা রাশিয়ার বিরোধীদলের উপর নজিরবিহীন দমন চালানো হচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে বিক্ষোভের নেতাদের হত্যা, কারাদন্ড বা জোরপূর্বক দেশত্যাগের মত ঘটনাও রয়েছে।