জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বৃহস্পতিবার জানান যে, ইউক্রেন থেকে শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই ১০ লক্ষ লোক পালিয়ে গিয়েছে। এটিই বিগত কয়েক দশকের মধ্যে কোন দেশ থেকে দ্রুততম এবং সর্ববৃহৎ গণপ্রস্থানের অন্যতম ঘটনা।
ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রতি ঘন্টায়, প্রতি মিনিটে, সংঘাতের ভয়াবহ বাস্তবতা থেকে বাঁচতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ পালাচ্ছে। দেশটির ভেতরে অগণিত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “এবং যদি না সংঘাতের আশু অবসান হয়, তাহলে আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হতে পারে।”
সোমবারে যখন তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য রাখেন, তখন তিনি জানিয়েছিলেন যে, শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই ২,৮০,০০০ এরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত সেই সংখ্যাটি বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৫,৪৭,৯৮২ তে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বা ইউএনএইচসিআর।
হাঙ্গেরি, মলডোভা, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতেও শরণার্থীর সংখ্যা দ্রুতই বেড়ে চলেছে। মূলত পূর্ব ইউক্রেনের প্রায় ৫০,০০০ মানুষ রাশিয়াতেও আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা, ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, ইউক্রেন ছেড়ে পালানো মানুষের মধ্যে অর্ধেকই শিশু।
আগামী তিন মাসের জন্য দেশটির অভ্যন্তরে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে জরুরি চাহিদা মেটাতে, জাতিসংঘ মঙ্গলবার ১৭০ কোটি ডলার সাহায্য প্রার্থনা করে। বিভিন্ন দেশ তাৎক্ষণিকভাবে ১৫০ কোটি ডলার সাহায্যের অঙ্গীকার করেছে। সেই অর্থ দিয়ে ইউএনএইচসিআর ২৪ লক্ষ শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীকে সহায়তা প্রদানের আশা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রও গত সপ্তাহে ইউক্রেনের মানুষের জন্য ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ডলারের নতুন মানবিক তহবিলের ঘোষণা দেয়।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিনডা থমাস-গ্রিনফিল্ড এক বিবৃতিতে বলেন, “আবাসিক এলাকা ও পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে রুশ বাহিনীর ক্রমবর্ধমান সহিংস ও ব্যাপক আক্রমণ থেকে তারা পালাচ্ছে – যেসব হামলার মধ্যে হাসপাতাল ও কিন্ডারগার্টেনে গোলাবর্ষণ থেকে শুরু করে শহরের কেন্দ্রে রকেট হামলা পর্যন্ত রয়েছে।” তিনি আরও বলেন , “তার সার্বভৌম প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অপ্ররোচিত ও অযৌক্তিক আক্রমণটিতে মানবিক ক্ষতি প্রতিনিয়ত দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে।”