বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী বোর্ড আফগানিস্তানের জমাট (frozen) কল্যাণ তহবিল থেকে জরুরিভাবে দেশটিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক কর্মসূচিতে অর্থায়নের জন্য ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের বেশি ব্যবহার করার একটি পরিকল্পনা মঙ্গলবার (১ মার্চ) অনুমোদন করেছে বলে ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
এই পরিকল্পনাটি নিষিদ্ধ তালিবান কর্তৃপক্ষকে এড়িয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক দাতব্য গোষ্ঠীর মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করবে। এর মাধ্যমে দেশটির ক্রমবর্ধমান মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের চেষ্টাসমূহ নতুন মাত্রা পাবে।
বিশ্বব্যাংক একটি বিবৃতিতে বলেছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো “প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিষেবাগুলো সরবরাহ, দুর্বল আফগানদের রক্ষা, মানব পুঁজি এবং মূল অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষেবাগুলো সংরক্ষণে সহায়তা করা এবং ভবিষ্যতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করা”।
গত বছর অগাস্টে আফগানিস্তান পুনর্গঠন ট্রাস্ট ফান্ড (এআরটিএফ) স্থগিত করা হয়েছিল যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ২০ বছর যুদ্ধের পর আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এবং তালিবানরা পুনরায় কাবুলের ক্ষমতা দখন করে।
যুক্তরাষ্ট্র আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলের প্রায় ৯০০ কোটি (৯ বিলিয়ন) ডলার স্থগিত করলে বিদেশি সরকারগুলো আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়। এই সহায়তা আফগানিস্তানের সরকারি ব্যয়ের ৭০ শতাংশের জোগান দিত।
তহবিল হ্রাস করার ফলে দেশটির অর্থনৈতিক পতন ত্বরান্বিত হয়, নগদ অর্থের সংকটকে আরও তীব্র করে এবং দেশটির মানবিক সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। জাতিসংঘ বলেছে, এই সংকট আফগানিস্তানের ৩ কোটি ৯০ লাখ (৩৯ মিলিয়ন) জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি জনগণকে অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে, এআরটিএফ দাতারা প্রায় ৬০ কোটি (৬০০ মিলিয়ন) ডলার মূল্যের চারটি প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, যা “শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে জরুরি প্রয়োজনে এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জীবিকা লক্ষ্য করে করা হবে”।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “মেয়ে শিশু ও নারীরা যাতে অংশগ্রহণ করে এবং সহায়তা থেকে উপকৃত হয় তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হবে”।
তালিবানরা নারীদের কাজের ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ এবং ঘনিষ্ঠ পুরুষ সঙ্গী ছাড়া ভ্রমণ সীমিত করে গত দুই দশকে অধিকার আদায়ে তাদের অর্জিত সাফল্যগুলোকে বাধাগ্রস্থ করেছে।
তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর থেকে সপ্তম শ্রেণির ঊর্ধ্বে বেশির ভাগ মেয়েকে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি বলছে যে, এই মাসের শেষের দিকে সব মেয়েকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে দেওয়া হবে।