বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে—জানালেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। (ছবি- ইউএনবি)

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আগের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, “আগের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো এক শিক্ষাবর্ষে সব ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। আশা করছি, এই শিক্ষাবর্ষ এবং আগামী শিক্ষাবর্ষ মিলিয়ে যেখানে যত ঘাটতি সব পূরণ করা সম্ভব হবে।”

বুধবার (২ মার্চ) সকালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

দীপু মনি বলেন, “প্রাথমিকের ক্লাসও আজ শুরু হয়েছে। মাধ্যমিকের ক্লাস আগেই শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারব।”

তিনি বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী এইচএসসি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাবে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কথা বলব, তারা যাতে শুরুর দিকের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণে কিছু অ্যাসেসমেন্ট করিয়ে নেয়।”

পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা আশা করছি বইগুলো ভালো হবে। চেষ্টা করা হয়েছে বইগুলো ভুলত্রুটি মুক্ত রাখতে। তবে একবারেই তা ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। আমাদের রিভিউ কমিটি আছে। তারা আবার রিভিউ করবে। আগামী দিনে আমাদের পাঠ্যপুস্তক আরও ভালো হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চাই, যেখানে তারা আনন্দের সঙ্গে শিখবে। শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করবে, মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে। সেই জায়গা থেকে বইয়ের বড় ভূমিকা আছে।”

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানী ঢাকার সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন দীপু মনি।

তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে, সাত কলেজে আগে কিছু সমস্যা ছিল, যেটা খুবই স্বাভাবিক। যখন থেকে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়, তখন থেকেই তাদের মানের ভিন্নতা আসে, তাদের পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম ভিন্ন মানে করতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীর চেয়ে কয়েকগুন শিক্ষার্থী এই সাত কলেজে। এটা দুই দিক থেকে সমন্বয়ের ব্যাপার রয়েছে।”

দীপু মনি বলেন, “ধীরে ধীরে তারা এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠছে। আমরাও সাত কলেজের সঙ্গে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা সমন্বয় করছে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে আছি। সে কারণেই সেশনজট এখন অনেকটাই কমে এসেছে। আশা করি, সেশনজট সমস্যা আর থাকবে না।পরীক্ষার ফলাফলগুলো যথাসময়ে দিতে তারা উদ্যোগ নিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অধিভুক্ত কলেজগুলোকে যেভাবে দেখা দরকার, সাত কলেজকেও সেভাবেই দেখবে। কাজেই আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করা এটা কোনো সমাধান নয়। এটাকে এই মুহূর্তে আমি কোনো যৌক্তিক দাবি বলে ভাবছি না। সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে উন্নত হচ্ছে, এটিই আমাদের জন্য যথার্থ মনে করি।”

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনও করেছে তারা।