উত্তর কোরিয়ার সর্ব-সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ : নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা 

দক্ষিণ কোরিয়ায় জনগণ রেল স্টেশনে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দৃশ্য দেখছেন, ৩০শে জানুয়ারি, ২০২২,ছবি/আন ইয়ং-জুন/এপি

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৯টি সদস্য দেশ শুক্রবার ৩০শে জানুয়ারী উত্তর কোরিয়ার মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নিন্দা জানায়। তারা জানায় এটি ছিল সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পিয়ংইয়ংয়ের বড় রকমের বাড়াবাড়ি এবং তার লক্ষ্য ছিল এই অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলা ।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, লিন্ডা টমাস গ্রীনফিল্ড ১৫টি সদস্য দেশের সঙ্গে ৯০ মিনিট রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর বলেন, "আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই বেআইনি পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছি"।তিনি কাউন্সিলের অন্যান্য সপক্ষ যেমন, আলবেনিয়া, ব্রাজিল, ব্রিটেন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, জাপান, নরওয়ে ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিদের হয়ে তাদের পাশে থেকে কথা বলেন।

রবিবার স্থানীয় সময়ে এই উৎক্ষেপণ করা হয়, যা ছিল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বেলায় ৪ বছরের বেশি সময়ে উত্তর কোরিয়ার সব চেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।

টমাস গ্রীনফিল্ড বলেন, এই উৎক্ষেপণ নতুন ও বিব্রতকর এক রেকর্ড সৃষ্টি করলো। ডিপিআরকে এক মাসেই, অর্থাৎ জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করলো যা তাদের এবং ডব্লিউএমডি এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি। ডিপিআরকে'র অর্থ দাঁড়ায় গণতান্ত্রিক কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, যা হলো উত্তর কোরিয়ার সরকারি নাম।

নিরাপত্তা পরিষদের কতকগুলো প্রস্তাবের অধীনে উত্তর কোরিয়ার ওপর এ ধরণের উৎক্ষেপণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরে এবং পরবর্তী বছরে ভিয়েতনামে দুটি শীর্ষ পরমাণু আলোচনায় মিলিত হয়েছিলেন । পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে তা সহায়ক হয় নি, তবে দুটি দেশের উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হয়েছিল এবং কিম পরমাণু এবং দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিত করেছিলেন। বাইডেন প্রশাসন পিয়ংইয়ংকে বিনা শর্তে আলোচনায় মিলিত হতে বলেছে।

টমাস- গ্রীনফিল্ড শুক্রবার আবারও বলেন, "আমরা আলোচনায় সম্পৃক্ত হতে প্রস্তুত রয়েছি। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং কোরীয় উপদ্বীপের পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে, যা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সেই অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমরা ক্ষান্ত হবো না"।

এ সপ্তাহের গোড়াতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ রবিবারের আন্তর্জাতিক দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) উৎক্ষেপণের নিন্দা জানান।

গুতেরেজের মুখপাত্র বলেন, "এ ধরণের উৎক্ষেপণের বেলায় ২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়া যে স্থগিতকরণের কথা জানায়, এটা ছিল তার লংঘন"।