উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের স্ত্রী ও তার প্রভাবশালী ফুফু বুধবার জনসমক্ষে এসেছিলেন। মহামারির কারণে শাসক পরিবার দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকার পর এ দিন রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের এক ভিডিও ফুটেজে তাদের দেখানো হয়।
কিমের স্ত্রী রাই সোল জু এবং ফুফু কিম কিয়ং হুই রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের মানসুদে আর্ট থিয়েটারে চান্দ্র নতুন বছরের ছুটি উপলক্ষে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীতে অংশ নেন।
এর আগে গত বছর ৯ সেপ্টেম্বরে রাই সোল জুকে শেষ প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল। এ সময় তিনি স্বামীর সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সানের কুমসুসান প্যালেস পরিদর্শনে যান। কুমসুসান প্রাসাদে কিমের পিতা এবং পিতামহের মরোদেহ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
“যখন কিম স্ত্রী রাই সোল জুকে সঙ্গে নিয়ে থিয়েটারের মিলনায়তনে প্রবেশ করেন, দর্শকেরা আনন্দধ্বনি করে ওঠে”, জানায় রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, উত্তর কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী লাল ও কালো রঙের হ্যানবোক পোশাক পরিহিত রাই হাসিমুখে কিমের সঙ্গে প্রদর্শনী উপভোগ করছেন। কিম ও রাইকে শিল্পীদের সঙ্গে হাত মেলাতে এবং ছবি তুলতেও দেখা যায়।
ভিডিওচিত্রে প্রকাশ, ২০২০ সালের জানুয়ারির পর এই প্রথম কিমের ফুফু এবং শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা কিম কিয়ং হুই জনসম্মুখে এসেছেন। কিমের স্ত্রী রাইয়ের পাশে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তিনি।
কিমের ক্ষমতা গ্রহণের শুরুর বছরে তার ফুফু মুখ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন। ২০১৩ সালে তার প্রভাবশালী স্বামী জাং সং থায়েকের রাজদ্রোহের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন কিম। এর পরেই অন্তরালে চলে যান কিম কিয়ং হুই। এর ছয় বছর পর ২০২০ সালে আবার জনসমক্ষে আসেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ২০১৭ সালে জানায়, কিয়ং হুই পিয়ংইয়ংয়ের বাইরে কোথাও অবস্থান করছেন এবং অজ্ঞাত কোনো অসুখে ভুগছেন।
কিম জং উনের সঙ্গে বিভিন্ন পেশাগত ও সামরিক সফরে অংশ নিয়ে তার স্ত্রী রাই আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি পেয়েছিলেন। কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল কখনই তার একাধিক স্ত্রীদের কাউকে জনসমক্ষে নিয়ে আসেননি।
প্রায় এক বছর আড়ালে থাকার পর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে একটি কনসার্ট দেখতে প্রকাশ্যে আসেন রাই। এ সময় তার স্বাস্থ্য ও গর্ভধারণের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতেই তিনি বাইরে বের হন না। তবে তিনি “বাচ্চাদের সঙ্গে ভালো সময় কাটাচ্ছেন”।
গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা রাই ও কিমের তিন সন্তান রয়েছে। যদিও নিশ্চিত করে কিছুই জানা যায়নি।
এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করেনি। যদিও দেশটি সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা এবং কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।