যেভাবে ব্যালে বালিকা ইরার ছবি ভাইরাল হলো সামাজিক মাধ্যমে

মোবাসশিরা কামাল ইরা

২০ থেকে ২২ জানুয়ারী নৃত্য উৎসবে যোগ দিতে মেয়েটি ঢাকায় আসে। অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল শিল্পকলা একাডেমিতে। মেয়েটির নাম মোবাসশিরা কামাল ইরা। বাড়ি নওগাঁ শহরের জগৎসিংহপুর মহল্লার বটতলী মোড়। আবু হায়াত মোহাম্মদ কামাল ও ফাহমিদা আক্তার দম্পতির চার মেয়ের মধ্যে তৃতীয় ইরা। বাবা ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও মা গৃহিনী। নওগাঁ সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বর্ষে বাণিজ্য শাখায় পড়ছেন ইরা। ঢাকায় পরিচয় হয় ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার জয়িতা আফরিনের সঙ্গে। আলাদা প্রতিভা দেখতে পান তিনি ইরার চোখে।

২৩ জানুয়ারি সকালে ইরাকে নিয়ে জয়িতা আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। রাজু ভাস্কর্যের পাশে চলমান শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন আন্দোলনের প্লাকার্ড ঝুলছে। এই থিমকে সামনে রেখে ছবি তোলা শুরু করেন জয়িতা। ২৫ জানুয়ারি কিছু ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন তিনি। ছবিতে দেখা যায় এক বালিকা হাত-পা ছুড়ে শূন্যে ভাসছে। মুহুর্তে ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। ব্যস শুরু হয় তোলপাড় বাংলাদেশে। ইরা জানান, ব্যালে-জিমনেস্টিকের সমন্বয়ে এই নাচের ছবি। যাতে উঠে আসে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের প্রতীক সমর্থন। কঠোর পরিশ্রমে শিখতে হয় এ নাচ।

মোবাসশিরা কামাল ইরা

মোবাসশিরা কামাল ইরা বলল, "৫-৬ বছর বয়স থেকেই নাচের শিক্ষক সুলতান মাহমুদের কাছে নাচ শিখেছি। ২০২০ সালে এসএসসি পাশ করলাম। সে সময় শাস্ত্রীয় নৃত্য ও ভরতনাট্যম নিয়ে ভারতে গিয়ে কিছু শেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন শুরু হয়। এতে মন খারাপ হয়ে যায়। তখন ভাবলাম আমার দ্বারা কিছু হবে না বা কিছুই করতে পারবো না- এমন চিন্তাধারা মনের মধ্যে আসে। তখন মা পরামর্শ দিলেন ইন্টারনেট থেকে ইউটিউব দেখে ঘরে বসে নাচ শিখতে। বলা যায় ইন্টারনেট দেখেই শেখা। বাংলাদেশে ব্যালে করে এমন শিল্পী খুবই কম আছে। কিন্তু দেশের বাইরে ব্যালের ব্যাপক ব্যবহার আছে। আমার ইচ্ছা আছে ব্যালে নিয়ে কাজ করা। লকডাউনের সময়ে ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে আপলোড করতাম। সেখান থেকে সাগর দেবনাথ নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার ইচ্ছা ছিল এধরণের ফটোশুট নিয়ে কাজ করার। আমিও সমর্থন দিলাম। তারপর ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে কিছু ফটোশুট করলাম। তারপর জয়িতা আফরিন আপু ছবিগুলো দেখেন এবং তিনিও এ ধরণের ছবি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। গত বছরের ২ নভেম্বর ধানমন্ডির লেকের পাড়ে ফটোশুট করা হয়। সেই ছবিগুলো ফেসবুকে আপলোডের পর সাড়া পাওয়া যায়।" ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে ইরা বলেন, "ভালভাবে পড়াশুনা করে এইচএসসি পাশ করতে চাই যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। সেখানে নাচ নিয়ে পড়াশুনা করতে চাই।"