বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে উত্তর ইথিওপিয়ার তিনটি সংঘাত-আক্রান্ত অঞ্চলে রেকর্ড সংখ্যক৯০ লক্ষ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভুগছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে সংঘাত শুরু হওয়ার আগে টিগ্রায়তে পরিচালিত জাতিসংঘের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৯৩ শতাংশ জনসংখ্যার পর্যাপ্ত খাবার ছিল। এখন, যুদ্ধের প্রায় ১৫ মাস পরে , জাতিসংঘ রিপোর্ট করেছে যে ৮৩ শতাংশ জনসংখ্যা খাদ্যের অভাবে রয়েছে, প্রায় ৪০ শতাংশ প্রচন্ড ক্ষুধায় ভুগছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিগ্রায়তে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১৩ শতাংশ শিশু এবং সমস্ত গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদের অর্ধেক অপুষ্টিতে ভুগছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র টমসন ফিরি বলছেন, সঠিক পুষ্টির অভাবের কারণে নব জাত শিশুর কম ওজন কম হচ্ছে এবং মাতৃমৃত্যু ঘটছে।
ফিরি বলেন, "ডব্লিউএফপি অনুমান করে যে, উত্তর ইথিওপিয়ার সঙ্কট-আক্রান্ত পরিবারগুলি গত মাসগুলিতে তাদের ক্যালরির চাহিদার ৩০ শতাংশেরও কম পেয়েছিল, যা মানুষকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে,"৷ তিনি বলেন, মানবিক খাদ্য সহায়তা কমপক্ষে ২০২২ সালের পুরো সময় জুড়ে প্রয়োজন।"
যেহেতু টিগ্রায়তে যুদ্ধ উত্তর ইথিওপিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, ক্ষুধাও প্রতিবেশী আমহারা এবং আফার অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ফিরি বলেছেন যে লড়াই এবং সংঘাত-চালিত স্থানচ্যুতি সেই অঞ্চলগুলিতে ক্ষুধা ও অপুষ্টির হারকে বিপজ্জনক স্তরে ঠেলে দিচ্ছে।
অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, ডব্লিউএফপি রিপোর্ট করেছে যে তারা মার্চ মাস থেকে উত্তর ইথিওপিয়া জুড়ে প্রায় চল্লিশ লক্ষ লোকের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে পেরেছে। তবে তারা বলছে যে এই অঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের কারণে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে খাদ্য কনভয় টিগ্রায় পৌঁছাতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
ডব্লিউএফপি যুদ্ধরত দলগুলিকে মানবিক কারণে থামতে সম্মত হওয়ার জন্য আবেদন করছে যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিরাপদে জীবন রক্ষাকারী খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ একেবার সম্মুখসারি পর্যন্ত পরিবহন করতে পারে। এতে বলা হয়েছে, লক্ষ লক্ষ বেসামরিক নাগরিকের জীবন, ও স্বাস্থ্য এর উপর নির্ভর করে।