নেটো এবং বিভিন্ন ইউরোপীয় অংশীদারদের পাশাপাশি ইউক্রেনের সাথে পরামর্শের পর, সশস্ত্র সংঘাত এড়ানোর লক্ষ্যে কূটনৈতিক ভাবে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে, রাশিয়ার নতুন করে সুরক্ষা দাবিগুলিকে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র মস্কোকে এক লিখিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জন সালিভান বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকে ব্যক্তিগতভাবে নথিটি হস্তান্তরিত করেছেন। ওই নথিতে নেটো রাশিয়ার কাছে ইউরোপীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত নিজস্ব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন পৃথকভাবে ওই নথির দৈর্ঘ্য আরও কয়েক পৃষ্ঠা হবে।
কর্মকর্তারা এই জবাবটিকে ক্রেমলিনের উদ্বেগ নিরসনের উপায় হিসাবে চিত্রিত করেছেন এবং সব পক্ষকে আরও কূটনীতির পথ অনুসরণ করার সুযোগ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, "আমরা ইউক্রেনে বলপ্রয়োগের ধরণ সম্পর্কে পারস্পরিক স্বচ্ছতার ব্যবস্থার সম্ভাবনার কথা বলেছি, সেইসাথে ইউরোপে সামরিক মহড়া এবং কৌশলের বিষয়ে আস্থা বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থার কথাও বলেছি। আমরা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে এবং আরও রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি দ্রুত ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত করতে সমান মনোযোগ এবং শক্তির সাথে কাজ করছি।"
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্ট ভাবে বিস্তারিত বলতে অস্বীকার করেছেন, যদিও তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে ওয়াশিংটন এবং মস্কো এখনও ঐকমত্য খুঁজে পেতে পারে এবং এমনকি ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কিত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলিতে অগ্রগতি আসতে পারে।
মস্কোর নিরাপত্তা বিষয়ক দাবির মধ্যে রয়েছে নেটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের ইতি টানা, বিশেষ করে ইউক্রেন এবং জর্জিয়া, সেইসাথে পূর্ব ইউরোপে নেটো সৈন্যদের গুটিয়ে নেয়া।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেই দাবিগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, উপরন্তু রাশিয়াকে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করার দাবি করেছে এবং পরিবর্তে সামরিক মহড়া, সেইসাথে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন সহ বিভিন্ন বিষয়ে মস্কোর সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
নেটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এবং মস্কোকে "ইউক্রেন, জর্জিয়া এবং মালদোভা থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে সংবাদদাতাদের বলেন, এই দেশগুলির সম্মতি ছাড়াই মস্কো সেখানে তাদের বাহিনী মোতায়েন করেছে।"
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্যমিত্রো কুলেবা তার দেশের সীমান্তে এবং রাশিয়ান বাহিনীর দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা রুশ সৈন্যদের সংখ্যার হুমকির কথা স্বীকার করে বুধবার বলেছেন, রাশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ায় কিয়েভের কোনো আপত্তি নেই।
কিয়েভে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আমেরিকান নাগরিকদের এখনই প্রস্থান করার কথা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছে।
এর আগে বুধবার, রাশিয়ান কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। রাশিয়ার বাহিনী প্রতিবেশী ইউক্রেন আক্রমণ করলে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবিত প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে এটি ছিল একটি ।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দ্যমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলি "ধ্বংসাত্মক" হবে তবে রাজনৈতিকভাবে বেদনাদায়ক নয়।
উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী উইন্ডি শেরম্যানের মতে, ২০১৪ সাল থেকে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা ও অ-নিরাপত্তা উভয় খাতেই ৫০০ কোটি ডলারের বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে ৩৫.১ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা রয়েছে "রাশিয়ার আগ্রাসনে" বাস্তুচ্যুত বা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য।