নেটফ্লিক্সের প্রথম আরবি সিনেমা বলে কথা! এমনিতেই এটা অনেক বড় ঘটনা।কিন্তু সিনামাটি মুক্তি পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই মিশরের জনগণ এতটাই ক্ষেপে গেল যে সমালোচকেরা এটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানালেন।
ইতালিয়ান কমেডি ড্রামা "পারফেটি স্কোনোসিউটি" (পারফেক্ট স্ট্রেঞ্জারস)-র রিমেক “আশাব ওয়ালা আজ”, যাতে অভিনয় করেছেন মিশর, জর্দান ও লেবননের প্রখ্যাত অভিনেতারা। ছবিটি একদল বন্ধুকে নিয়ে যারা ডিনারে যায় এবং রাতটাকে আরও ইন্টারেস্টিং করার জন্য ঠিক করে প্রত্যেকে যার যার টেক্সট মেসেজ,ফোনকল, ইমেইল গ্রুপের বাকিদের সাথে শেয়ার করবে।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে গ্রুপের মেম্বারদের সম্পর্কে হঠাত্ হোঁচট খাওযার মতো সত্য এই গেমের মাধ্যমে উঠে আসে যেমন, কারো পরকীয়া, বিবাহপূর্ব শারীরিক সম্পর্ক,সমকামিতা ইত্যাদি। এ সবগুলোই মিশরে নিষিদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০ জানুয়ারি মুক্তি পাওয়া ছবিটি তড়িৎগতিতে মিশরের সবচেয়ে বেশিবার দেখা সিনেমার তালিকায় জায়গা করে নেয়।
কিন্তু এরপরই শুরু হয় হট্টগোল। সিনেমাটি স্ট্রিমিং-এর অনুমতি দেয়ায় দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং সেন্সর বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। একেবারে নেটফ্লিক্সকেই নিষিদ্ধ করা হবে কিনা- সে বিষয়ে আলোচনার জন্য সাংসদরা বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেন।“অসাম্মানজনক” সিনেমাটির ডাবিং-এ কন্ঠ দেয়ার কারণে মিশরীয় অভিনেত্রী মোনা জাকির উপর অনলাইনে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। ইউ এস স্ট্রিমিং জায়ান্ট নেটফ্লিক্স এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি।
একজন আইনজীবী দাবি করেন সিনেমাটি “সমকামিতা প্রচার” করছে; আরেকজন বলেন এটি “পারিবারিক মূল্যবোধ ধ্বংস করছে”। মিশরে সমকামিতা বে-আইনি না হলেও একে খারাপ চোখে দেখা হয়। বিবাহ পূর্ব শারীরিক সম্পর্কও মিশরে একটি ট্যাবু। চরমক্ষেত্রে এর কারণে অনার কিলিং এর মতো ঘটনাও ঘটে।
অন্যদিকে মিশরীয় চলচ্চিত্র সমালোচক তারেক শেন্নাওয়ি জানিয়েছেন, মোনা জাকির ওপর আক্রমণে তিনি বিস্মিত।তিনি বলেন, সিনেমাটির সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়বস্তুর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া উচিত নয়।
প্রখ্যাত বামপন্থী আইনজীবী খালেদ আলি তার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “এটি সাহসী, প্রথাবিরোধী এবং বিস্তৃত বিষয় যা আরবি সিনেমায় আগে উঠে আসেনি। আমরা যতই উপেক্ষা করি,নীরব থাকি বা অস্বীকার করার চেষ্টা করি না কেন; এটিই বাস্তব”