বাংলাদেশে খুন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের কারণে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রদত্ত চিঠি নিয়ে জাতীয় সংসদে সরকারের ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) এক অনির্ধারিত আলচনায় তিনি বলেন, "আমরা এর আপডেট কী তা জানতে চাই। যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের যে সাত সদস্যের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটির সর্বশেষ কী অবস্থা এবং এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলতে গিয়ে বলা যায় ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের করে দিয়েছেন’"।
হারুন অর রশিদ বিএনপির বিরুদ্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, "আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, আপনি আগামী অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিবৃতি দেবেন। নতুবা ধরে নেব সরকার ও সরকারের মন্ত্রীরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সরকার কোনো লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে কি না, দিলে কবে থেকে দিয়েছে? আওয়ামী লীগ বিদেশে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেছে কি না এবং বিএনপি কোনো লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে কি না, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বক্তব্য উত্থাপন করবেন। এ দাবি আমরা করছি"।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দিতে চিঠি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ১২টি মানবাধিকার সংগঠন। র্যাবের বিরুদ্ধে গুম, খুন, বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ আনা হয়। জাতিসংঘের পিস অপারেশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জিন পিয়ারে ল্যাক্রোইক্সের কাছে এই চিঠি পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। দুই মাস আগে পাঠানো চিঠিটি ২০ জানুয়ারি হিউমান রাইটস ওয়াচের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র গত বছর ১০ ডিসেম্বর গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের দায়ে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও পররাষ্ট্র দপ্তর র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞায় থাকা কর্মকর্তারা হলেন—পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপচিালক তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনোয়ার লতিফ খান ও র্যাব-৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।