বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল কয়েকটি জায়গায়, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বসানো সরঞ্জামগুলো, চীনের একটিমাত্র কোম্পানী তৈরি করেছে। কোম্পানীটির চীনের সামরিক বাহিনী ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাথে বেশ গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
দাভোস এর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ইওরোপের বৃহত্তম বন্দরগুলো, অ্যামস্টারড্যাম থেকে শুরু করে এথেন্স পর্যন্ত বিমানবন্দর, রাশিয়ার সাথে নেটোর সীমান্ত – এ সকল স্থানই নাকটেক-এর তৈরি করা সরঞ্জামের উপর নির্ভর করে। কোম্পানীটি কার্গো ও যানবাহন স্ক্যানার সরবরাহকারীদের মধ্যে, আয়ের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানী হয়ে উঠেছে।
জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে নাকটেক নিষিদ্ধ হয়ে আছে। কিন্তু কোম্পানীটি ইউরোপে অনেক গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের মধ্যে ২৬ টি দেশেই কোম্পানীটি তাদের সরঞ্জাম বসিয়েছে বলে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কর্তৃক পর্যালোচনা করা সরকারী ক্রয়াদেশ, সরকারী নথি ও কর্পোরেট রেকর্ড থেকে জানা যায়।
পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ আশংকা করছেন যে, চীন নাকটেকের সরঞ্জাম অপব্যবহার করে, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নাশকতা চালাতে পারে। অথবা তাদের সরঞ্জামে স্ক্যান হওয়া জিনিসপত্র থেকে, সরকারী, শিল্পকারখানা সংশ্লিষ্ট বা ব্যক্তিগত তথ্যগুলো চীন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিতে পারে।
সমালোচকরা আশংকা করেন যে, চীনের জাতীয় গোয়েন্দা আইনের কারণে, যার আওতায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে চীনের কোম্পানীগুলো সংগৃহীত তথ্য দিতে বাধ্য, নাকটেক তাদের সরঞ্জাম দিয়ে স্ক্যান হওয়া জিনিসপত্র বা মানুষ সম্পর্কিত সংবেদনশীল তথ্য, বেইজিংকে হস্তান্তর করতে বাধ্য হবে। আইনগুলো কোম্পানীদেরকে তাদের কাছে থাকা তথ্য, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে হস্তান্তর করতে বাধ্য করে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে, কানাডার সরকারের একটি নিরাপত্তা পর্যালোচনায় উঠে আসে যে নাকটেকের এক্স-রে স্ক্যানারগুলোকে, গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে সেই তথ্য প্রেরণ করতে ব্যবহার করা সম্ভব। সেগুলো দিয়ে স্ক্যান করার সময় ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা ভেদ করা ও স্ক্যানারগুলোতে দেখানো ফলাফল পরিবর্তন করে, সেগুলো দিয়ে "অসৎ" উদ্দেশ্যে কোন কিছু পার করে নেওয়াও সম্ভব।