যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথী ২৬ জন, ডেমোক্রেটিক ২৪ রিপাবলিকান ২

দেড় বছর পর যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জোরোশোরে। ডেমোক্রেটিক দলের মধ্যে প্রার্থীতার প্রতিদ্বন্দ্বীতা প্রকট হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

দেড় বছর পর যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জোরোশোরে। ডেমোক্রেটিক দলের মধ্যে প্রার্থীতার প্রতিদ্বন্দ্বীতা প্রকট হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। আমাদের জাতীয় সংবাদদাতা জিম মেলনের রিপোর্ট শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।

Your browser doesn’t support HTML5

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথী ২৬ জন, ডেমোক্রেটিক ২৪ রিপাবলিকান ২

ইতিমধ্যেই সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন এবং অন্যদের তুলনায় এগিয়ে আছেন। সর্বসাম্প্রতিক নির্বাচনী জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্রেটিক দলের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী গতবারের জনপ্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সকে ছাড়িয়ে জো বাইডেন ডেমোক্রেটিক দলের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছেন। ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্যও রিপাবলিকান প্রার্থী হিসাবে মোটামুটি নিশ্চিত। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবেক জো বাইডেন সবচেয়ে যোগ্য বলে ধারনা করছেন অনেকেই।

নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্য দিয়ে এই সপ্তাহেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে বাইডেন বলেন, “মনে করুন আমরা কারা। আমেরিকা আমাদের দেশ। আমরা যদি কোনো কাজ করার ইচ্ছা মনে মনে পোষণ করি; তা কখনোই ব্যর্থ হয় না। এই সম্ভাবনার দেশটিতে সেই বিষয়টি ঠিক রাখতে হলে এই প্রশাসনের সমাপ্তি দরকার”।

গতমাসে ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে

জো বাইডেন দলের অন্যাণ্য প্রার্থীদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে আছেন। কিন্তু তার পরও শুধু বার্নী স্যান্ডার্স নয়, ম্যাসাচুসেটস সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন তার একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। ওয়ারেন বলেন, “এই দেশে আমাদের বড় এবং পদ্ধিগত পরিবর্তন প্রয়োজন”।

দল থেকে বেশ কয়েকজন নারী রাজনীতিবিদ এবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। এলিজাবেথ ওয়ারেন তাদের একজন। এছাড়া নিউইয়র্ক সেনেটর ক্রিস্টেন জিলিব্র্যান্ডও বেশ গ্রহণযোগ্য। জিলিব্রান্ড বলেন, “আমি নিশ্চিত যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হারাতে হলে ওহাইও, পেনসেলভেনিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনের মতো রাজ্যগুলোতে আমাদের জিততে হবে”।

বেশ কয়েকজন সংখ্যালঘূ সম্প্রদায়ের প্রার্থীসহ ডেমোক্রেটিক দল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। সর্বশেষ যিনি প্রার্থীতা ঘোষণা করছেন তিনি হলেন মন্টানা গভর্ণর ষ্টিভ বুলক। তিনি তাঁর প্রচারণার বিজ্ঞাপন করেছেন এভাবে, “আমি ষ্টিভ বুলক- প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছি। আপনাদের সহায়তায় আমরা আমাদের গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো”।

বাইডেনকে আমেরিকান রাজনীতিতে ডেমোক্রেটরা মনে করেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী। রাজনীতি বিশেষজ্ঞদেরও একই মত। এ নিয়ে মন্তব্য করেন George Washington University বিশ্লেষক ম্যাট ডালেক, “অনেক ডেমোক্রেট মনে করেন ট্রাম্পকে হারানো সম্ভব, এই দেশটি তাঁর অধীনে সমস্যায় আবর্তিত; দেশটির ক্ষতি করছেন তিনি যা বন্ধ হওয়া দরকার”।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডেমোক্রটিক দলের দুই শীর্ষ প্রার্থী জো বাইডেন ও বার্নিকে খাটো করে ডেমোক্রেটদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, “আপনাদের কাছে দুটোই অপশন- ‘স্লিপি জো এবং ক্রেজি বাইডেন’। আমি তাদের যে কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে প্রস্তুত। যতো তাড়াতাড়ি আপনারা ঠিক করে নিন। শুরু করি আসোন। কাউকে নির্বাচিত করুন”।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন- ট্রাম্পকে হারানো সহজ হবে না। থার্ড ওয়ের বিশ্লেষক জিম কেসলার বলেন, “নির্বাচনে প্রচারণা খুব ভালো করে করতে হবে। প্রেসিডেন্টের গ্রহনযোগ্যতা এখন বেশ ভালো -৫০-৫০। প্রেসিডেন্টের সম্ভাবনা বেশ ভালো”।

সেনেটর হিসাবে বাইডেনের বেশ লম্বা সময় পার করার পর তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। তার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক পেশার নানা সময়ের নানা ঘটনা রয়েছে যা টেনে রিপাবলিকানরা তাকে আক্রমন করবেন। ফলে সতর্ক থাকা দরকার।

ম্যাট ডেলাক এ নিয়ে বলেন, “আমি মনে করি ওই বিষয়গুলো হোয়াইট হাউজের জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ওই সময়কার নানা বিষয় নিয়ে তার ওপর রাজজনৈতিক সমাবেশে আক্রমন করবেন বিরোধীরা। আর প্রার্থীতার দৌড়ে সবার আগহে থাকার কারনেও বিরোধীদের প্রথম টার্গেটই হবেন তিনি”।

এবারকার নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে জো বাইডেনের নাম সবার আগে- যা আগের দুবারকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কখনোই তিনি আসেন নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের কাছে ইতিমধ্যে ২৬জন প্রার্থী ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিযোগীতা করার জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ২৪ জন ডেমোক্রেটিক দলের, ২ জন রিপাবলিকান দলের।

রিপাবলীকান দলের দুজন হচ্ছেন- বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটস গভর্ণর বিল ওয়েল্ড।

ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হলেন- সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভার্মন্ট সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, কলোরাডো সেনেটর মাইকেল বেনেট, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র বিল ডে ব্লাজিও, নিউ জার্সি সেনেটর কোরি বুকার

মন্টানা গভর্ণর ষ্টিভ বুলক, ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ড মেয়র পিটে বুটিগেগ

সান এ্যান্টনিওর সাবেক মেয়র ও সাবেক হাউজিং মন্ত্রী হুলিয়ান ক্যাস্ট্রো, সাবেক মেরীল্যান্ড কংগ্রেসম্যান জন ডেলানী, হাওয়াইয় কংগ্রেসওম্যান তুলসী গ্যাব্বার্ড, নিউইয়র্ক সেনেটর ক্রিস্টেন জিলিব্র্যান্ড, আলাস্কার সাবেক সেনেটর মাইক গ্রাভেল, ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর কামালা হ্যারিস, কলোরাডোর সাবেক গভর্ণর জন হিকেনলুপার, ওয়াশিংটন গভর্ণর জে ইনসলি, মিনেসোটা সেনেটর এ্যামি ক্লোবুচার, ফ্লরিডার মিরামার মেয়র ওয়েন মেসাম, ম্যাসাচুসেটস কংগ্রেসম্যান সেথ মাউল্টন, টেক্সাস কংগ্রেসম্যান বেটো ও রোরকে, ওহাইও কংগ্রেসম্যান টিম রায়ান, ক্যালিফোর্নিয়া কংগ্রেসম্যান এরিক সোয়ালওয়েল, ম্যাসাচুসেটস সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, লেখক ম্যারিয়ানা উইলিয়ামসন এবং নিউইয়র্কের লেখক ও উদ্যোক্তা এ্যান্ড্রিউ ইয়াং।