ধূপ-ধুনুচি, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। পঞ্জিকার সূচি অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা ৫৩ মিনিটে ষষ্টী শুরু হয়েছে। বোধনের ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। সকালে শিশির স্নাত শারদ প্রভাতে বেজে ওঠা দেবীর আগমনী সুরে মণ্ডপগুলোতে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। তবে সবকিছুতেই ছিল স্বাস্থ্যবিধি। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে গত রাত থেকে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বলেছেন, সকল মণ্ডপে থাকছে পুলিশের নিরাপত্তা বলয়।
শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, "দুর্গা পূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসব।" বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি জানান, এ বছর রাজধানীতে ২৩৮টি ও সারা দেশে ৩২ হাজার ১১৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের সভাপতি সমীর চন্দ বলেন, প্রতি বছর আমরা মহাধুমধামে পূজার আয়োজন করি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আলোকসজ্জা সীমিত করা হয়েছে। মণ্ডপে আগত ভক্তবৃন্দকে সরবরাহ করার জন্য মাস্ক রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পূজা মণ্ডপের প্রতিটি কোনায় হ্যান্ডস্যানিটাইজার থাকছে। দর্শনার্থীদের মাঝে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ১০১ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করছে পূজা মণ্ডপে।
এ বছর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করবেন ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায়। মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এ বছরও রামকৃষ্ণ মিশন মঠে হবে না কুমারী পূজা। এ বছর কলাবাগান মাঠে মেলেনি পূজার অনুমতি। ধানমন্ডি সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমেন সাহা জানান, কলাবাগান মাঠে সিটি করপোরেশনের অনুমতি না পেয়ে কলাবাগান স্টাফ কোয়ার্টার মাঠে শেষ মুহূর্তে পূজার আয়োজন করেছেন।
রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট, বনানী, উত্তরা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাতে স্থাপন করা হয়েছে বড় মণ্ডপ। এই এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি উৎসব হয়ে থাকে প্রতি বছর। তবে এবার করোনার কারণে অনেক অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে সীমিত পরিসরে। বনানী পূজা কমিটির মিডিয়া কনভেনার সন্তোষ শর্মা জানান, পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি থাকছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।