১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ভোট দেয়াকে “প্রেমে পড়ার মতো" ঘটনা বলে বর্ণনা করেছিলেন আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু। দশকের পর দশক ধরে বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের পর তাঁর সেই মন্তব্যের মধ্যে ছিল নিজস্ব কৌতুকবোধ এবং গভীর আবেগ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারী সূত্র জানিয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ডেসমন্ড এম্পিলো টুটু, যার নৈতিক আদর্শ দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকে আলোড়িত করতো, তিনি রবিবার মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। স্পষ্টভাষী টুটুকে জাতির বিবেক হিসাবে মানতেন কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গ উভয় সম্প্রদায়, যা একটি বিভক্ত জাতির জন্যে ছিল তাঁর বিশ্বাস এবং পুনর্মিলনের শক্তির প্রতি মানুষের দীর্ঘস্থায়ী সাক্ষ্য। তিনি শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং এমনকি তা শেষ হবার পরও সকলের জন্যে গ্রহণযোগ্য দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যে তিনি তাঁর লড়াই থেকে পিছু হঠেন নি। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যে কাজ করতে শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ উভয় সম্প্রদায়ের রাজনিতিকদেরকে তিনি সমানভাবে আহ্বান জানিয়েছেন। জীবনের শেষ বছরগুলোতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলতেন তাঁর স্বপ্নের ‘রংধনু জাতি’ এখনো হলো না। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই মানবাধিকার কর্মী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনী ভূখণ্ড দখল করে রাখা থেকে শুরু করে সমকামীদের অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যের সাহায্য নিয়ে মৃত্যু ত্বরান্বিত করার বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, “আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুর মৃত্যু দক্ষিণ আফ্রিকার অসামান্য ব্যক্তিদের একটি প্রজন্মের বিদায়ে আরেকটি শোকের অধ্যায়, যারা আমাদেরকে একটি স্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকা দিয়ে গেছেন”। জোহানেসবারগের পশ্চিমে রক্ষণশীল শহর ক্লারক্সডরপের একজন স্কুল শিক্ষকের পুত্র ডেসমন্ড টুটু ১৯৩১ সালের ৭ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন।