অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

 
নজরদারি অ্যাপের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা, বাংলাদেশের প্রত্যাখ্যান

নজরদারি অ্যাপের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা, বাংলাদেশের প্রত্যাখ্যান


নয়া দিল্লির একটি স্মার্ট ফোনে মোবাইল অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ দেখা যাচ্ছে। সমাজকর্মী, সাংবাদিক, বাবসায়ি, রাজনীতিবিদসহ, সরকারের তালিকায় থাকা ৫০ হাজার স্মার্ট ফোন নম্বরে নজরদারির জন্যে, একটি ইসরাইলি ফার্মের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা অ্যাপ সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। জুলাই ১৮, ২০২১। - এএফপি
নয়া দিল্লির একটি স্মার্ট ফোনে মোবাইল অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ দেখা যাচ্ছে। সমাজকর্মী, সাংবাদিক, বাবসায়ি, রাজনীতিবিদসহ, সরকারের তালিকায় থাকা ৫০ হাজার স্মার্ট ফোন নম্বরে নজরদারির জন্যে, একটি ইসরাইলি ফার্মের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা অ্যাপ সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। জুলাই ১৮, ২০২১। - এএফপি

ইসরাইলের গোয়েন্দা নজরদারি বিষয়ক প্রযুক্তি পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতার খবরে বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ৪৫টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও যুক্ত হয়েছে।

ইসরাইলের গোয়েন্দা নজরদারি বিষয়ক প্রযুক্তি পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতার খবরে বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ৪৫টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও যুক্ত হয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের সংবাদে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ হওয়ার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজনীতিক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তবে রিপোর্টটিতে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়নি- কতজন এবং কাদের নাম রয়েছে এতে।

বিভিন্ন সূত্র থকে বলা হচ্ছে, তিন ডজনেরও বেশি নাম রয়েছে এতে। যদিও স্বাধীন কোনো সূত্র থেকে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এই রিপোর্টটি নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান এমন কোনো আড়ি পাতা যন্ত্র কেনেনি। বেসরকারি কেউ কিনেছে কিনা তা তার জানা নেই।

গত পয়লা ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ‘অল দ্য প্রাইমমিনিস্টার’স মেন’ শিরোনামে একটি তথ্য প্রচার করে। এতে বলা হয়, ইসরাইল থেকে বাংলাদেশ আড়ি পাতার যন্ত্র কিনেছে। সেনা সদর দপ্তর তা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে। সরকারিভাবেও প্রত্যাখ্যান করা হয়। সেনা সদরের তরফেও রিপোর্টটিকে কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করা হয়।

বিরোধীরা গত কয়েক বছর থেকে অভিযোগ করে আসছেন, তাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে।পেগাসাসের রিপোর্ট সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর টেরোরিজম রিসার্স এর প্রধান শাফকাত মুনীর এই সংবাদদাতাকে বলেন, সম্প্রতি পেগাসাসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হ্যাকিংয়ের যে অভিযোগ এসেছে, তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

বর্তমান পৃথিবীতে জাতীয় নিরাপত্তার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো সাইবার নিরাপত্তা বা যেটাকে আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা বলেও জানি। পেগাসাসের হ্যাকিংয়ের কারণে যে সমস্যাগুলো আমাদের সামনে উঠে এসেছে, সে বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট ভাববার কারণ রয়েছে। তাই আমি মনে করি যে, সর্বাগ্রে সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আরো সুদৃঢ় করা প্রয়োজন এবং কোনোভাবেই যাতে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য কেউ চুরি বা আড়ি পাততে না পারে, বিশেষ করে সেটা যদি কোনো কমার্শিয়াল কারণে অথবা কোন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়। সেটা যাতে আমরা সবসময় প্রতিহত করতে পারি সেজন্য আমাদের সাইবার সিকিউরিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা সাইবার নিরাপত্তা অবকাঠামোকে আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করতে হবে।

ফোন হ্যাকের ঘটনা ফাঁস হওয়ায় বাংলাদেশের বিরোধী রাজনীতিক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীরা আতঙ্কের মধ্যেই রয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত সংবাদমাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন। কাদের নাম রয়েছে এটাও তারা জানার চেষ্টা করছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অতি গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের স্মার্টফোনে আড়ি পেতে সব তথ্য চুরি করে নিয়েছে পেগাসাস। পৃথিবীর ১৭টি সংবাদমাধ্যম একযোগে এই খবর প্রকাশ করেছে। এরমধ্যে ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ান অন্যতম। দক্ষিণ এশিয়ার সবচাইতে বেশি প্রতিক্রিয়া হয়েছে ভারতে। কারণ বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধী রাজনীতিকদের নাম এসেছে স্পাইওয়্যার পেগাসাস কাণ্ডে। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছেন। তারা বলছেন, বিরোধীদের টার্গেট করে পবিত্র জিনিসকে অপবিত্র করেছে সরকার। ভারত সরকার তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ভারতে শুধু সরকারের হাতে রয়েছে এই প্রযুক্তি।

পেগাসাস আতঙ্কে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দেশটির তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে ইমরানের ফোন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার ইসরাইলের এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে যেভাবে সাংবাদিক, রাজনীতিক ও প্রতিপক্ষদের ওপর নজরদারি চালিয়েছে তাতে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন।

XS
SM
MD
LG