ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায় – ইউএসএআইডি এবং ভয়েস অফ আমেরিকা
মানুষ হয়ে উঠছে শহরমুখী। একসময় তাদের পরিচয় হয় তারা ঢাকাবাসী। কিন্তু এই ঢাকাবাসীর ৪০ শতাংশই বাস করছে বস্তিতে। প্রায় প্রতিটি আবাসিক এলাকার পাশে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে মানুষের নিদারুণ কষ্টের চিত্র। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশে শহরে বসবাসকারীদের হার ছিল ৭.৬ শতাংশ। যা ২০১০ এ এসে দাঁড়ায় ২৭.১ শতাংশে। ২০৩০ সালে এই হার ৩৯.৩ শতাংশে পৌঁছবে। জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ড. এ কে এম নুরন্নবী বলছিলেন, একটি মেগাসিটিতে যদি ৪০ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বাস করে তাহলে সেই মেগাসিটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং দারিদ্রের হার আশংকাজনক হারে পৌঁছবে। যা গোটা জাতির জন্য উদ্বেগের কারণ।
ঢাকার বস্তিগুলোতে প্রতি একরে গড়ে ৮৩১ জন মানুষ বাস করছে। এই সব বস্তিবা্সীর প্রতি ৫ জনের মধ্যে ৩ জনেরই মৌলিক চাহিদা পুরণ হয় না। প্রতিটি পরিবারে মাসিক ৩৭২৫ টাকা আয়ের বিপরীতে খরচ হয় ৩২১৮ টাকা। USAID’র বাংলাদেশ শাখার পুষ্টি, জনসংখ্যা স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা বিভাগে কর্মরত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ড.সামিনা চৌধুরি বললেন, কম জায়গায় বেশি মানুষ থাকার ফলে রোগব্যাধি সংক্রমণের কথা। বস্তির বেশির ভাগ পরিবারেই ছোট্ট একটি ঘরে অনেক মানুষ গাদাগাদি করে থাকে। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। সেখানে বায়ুবাহিত রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমনকি যক্ষ্মাসহ ডায়রিয়া, কলেরা, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ জনিত রোগে ভোগে বস্তিবাসীরা।
শুধু যে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বস্তিবাসী তা নয়, তারা জড়িয়ে পড়ছে মাদক এবং নানা অপরাধ কর্মে। শিক্ষার অভাব এবং পুরুষ শাসিত সমাজের কারণে কুসংস্কার বাসা বাঁধছে তাদের মাঝে। জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ড. এ কে এম নুরন্নবীর মতে, পারিবারিক সহিংসতা ,নারী নির্যাতন এবং অপরাধ প্রবণতার হার বাড়ছে।
যে বয়সে স্কুলে যাবার কথা, সেই বয়সে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ঝুঁকছে অপরাধ জগতে দিকে। পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার আলো থেকে।
এভাবেই কি হারিয়ে যাবে আমাদের নতুন প্রজন্ম? যাদের চোখের তারায় জ্বলে উঠার কথা স্বনির্ভর, উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন । যাদের পায়ে ভর করে দাড়াঁবে বাংলাদেশ…?
না……আসুন আমরা এগিয়ে আসি জনবিস্ফোরণ রোধে। আমরাই গড়ি আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ।