রবিবার, ২১ জুন, যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবস। বাবা-মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে যখন মেয়েরা বড় হয়ে নারী হয়ে ওঠে, এবং একসঙ্গে কোনো কাজে অংশ নেয়। ভিওএ'র ক্যারোলিন প্রেসুত্তি এক বাবা এবং মেয়ের কাহিনী তুলে ধরেছেন, যারা বর্তমানের বিক্ষোভে একসাথে গ্রেফতার হয়েছেন।
জুলিয়া এবং ম্যালকম ইয়ং-এর জন্য, মানবাধিকার একটি যৌথ আবেগ। তাই যখন বাবা এবং মেয়ে পুলিশের হেফাজতে মৃত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি জর্জ ফ্লয়েডের জন্য বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের কথা শুনলো, তারা তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিলো ঐ মিছিলে যোগ দেবার।
এই লোকের থেকে তোমার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এমনকি মহামারীর সময়েও।কন্যা জুলিয়া ইয়াং বলেন, আমার বাবা এবং আমার মা আমাকে ছোটবেলা থেকে বিশ্বের বৈষম্য এবং অবিচার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন।
বাবা এবং মেয়ের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচারের তৃষ্ণা রয়েছে। ম্যালকম একজন আইনজীবী যিনি কয়েদিদের অধিকার প্রচার করেন। জুলিয়া কলেজে ইতিহাস পড়ান এবং অভিবাসনের উপর একটি বই লিখেছেন। গত বছরের জুলাই মাসে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের বাইরে অভিবাসী শিশুদের জন্য এক বিক্ষোভে অংশ নেন। জুলিয়া তার বাবাকে নাগরিক অবাধ্যতার পরিকল্পিত আইন সম্পর্কে ইমেইল করেছিল। জুলিয়া বলেন, আমি এই বিক্ষোভ সম্পর্কে আমার বাবার কাছে ইমেইল পাঠিয়ে ছিলাম এবং বললাম, "তুমি কি একসঙ্গে গ্রেফতার হতে চাও?" ম্যালকম তখন জবাব দেন, যে পরিবার একসঙ্গে গ্রেফতার হয় তারা সব সময় একসঙ্গে থাকে।" এবং ঐ বিক্ষোভে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিশৃঙ্খলার মধ্যে, বাবা এবং মেয়ের মধ্যে বন্ধন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। জুলিয়া বলেন "এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি ছিল।" ম্যালকম বলেন তাঁর হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরান হয়। জুলিয়া বলেন, "আমার বাবাকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম।
বাবা ম্যালকম বলেন, "জুলিয়া আবার আমার থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল এবং আমি লক্ষ করার চেষ্টা করলাম সে ঠিক আছে কিনা। দেখলাম সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এবং জানতে চাইছে আমি ঠিক আছি কিনা। 'আপনার সন্তান আপনার জন্য চিন্তিত, উদ্বিগ্ন এর চাইতে বেশী আর কি ভালো আশা করতে পারি আমি।
কন্যা জুলিয়া বলেন, "এই সব মানুষ এবং আমার বাবার সাথে দাঁড়িয়ে একাত্ম হয়ে প্রতিবাদ জানাতে পেরেছি, আমার জন্য এই অনুভুতিটি ছিল অনেক স্বস্তির।কয়েক মাস পরে, এই জুটি টেক্সাসের ডিলি তে যান হিস্পানিক নারীদের সাক্ষাৎকার নিতে যারা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছিলেন।
বাবা ম্যালকম বলেন, "এক পর্যায়ে জুলিয়া অনুভব করে যে আমি তাদের খুব নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। সে তখন আমার দিকে ফিরে বলল, 'বাবা, ওরা অস্বস্তিবোধ করছে। এটা ঠিক নয়।
জুলিয়া বলেন, "কয়েক সপ্তাহ এভাবে চলতে থাকার পর আমি বুঝতে পারি তিনি সত্যিই দক্ষ। সেই সব ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের জীবনের কাহিনী গুলো বের করে আনতে যারা সচরাচর তাদের মর্মস্পর্শী বর্ণনা দেন না বা বর্ণনা করতে তাদের কষ্ট হয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যে ব্যক্তি প্রতিবাদ শুরু করেছিল, ম্যালকম বলেন বর্ণবাদী অবিচারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ রুখে দাঁড়াচ্ছে। আমি আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।
ম্যালকম বলেন, "জুলিয়া এবং অন্যান্য তরুণদের এখনে শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দেখা, এই বিষয়গুলো নিয়ে চাপ সৃষ্টি করা, এসব কিছু দেখে আশা জাগে এবং মনে হয় তারা সফল হবে। এই সফলতা হয়তো আগে আসেনি কিন্তু আগামীতে আসতে পারে।