নতুন চাঁদ উঠেছে আকাশে-শুরু হ’লো আরেক রোজার মাস-রমজান মোবারক।মিশেল ও আমি – আমাদের পক্ষ থেকে গোটা যুক্তরাষ্ট্রের-তাবত দুনিয়ার মুসলিম জনগোষ্ঠীকে জানাই এ মোবারক মাসের শুভেচ্ছা।
এ মাস , অন্তর্দৃষ্টি প্রসারনের-আধ্যাত্মিক দূরদর্শন প্রক্ষেপনের – সেই সঙ্গে ক্ষমা-সহনশীলতা-নব উদ্দীপনায় উঠে দাঁড়ানোর শক্তি সঞ্চারণে, অপেক্ষাকৃত স্বল্প ভাগ্যের মানুষজনের প্রতি সহানুভুতি প্রদর্শনের – সমাজে-গোত্রে পারস্পরিক সহমর্মিতা রচনার সুযোগ এনে দেয় অনেকের জন্যেই। এসব শিক্ষার প্রতিটিই আপন মহিমার সৌর্য্যে উদ্ভাসিত এবং এক সঙ্গে এসব মিলেমিশে সর্বাঙ্গ সুন্দর পরিপুর্ণতায় বিকশিত হয়ে ওঠে। এমাসে ইফতারের জমায়েতে বিশ্বের সর্বত্র, রোজদারদের সামনে এনে হাজির করা হয় সর্বোত্তম সব নিয়ামত-আহার্য্য সামগ্রী।
এখানে যুক্তরাষ্ট্রে, বৈচিত্র বিন্যাস উদ্ভাসিত এখানকার সমাজ ব্যবস্থায় মূসলিম সম্প্রদায়কে পেয়ে ধন্য আমরা। এখানে সেই তাঁরাও রয়েছেন, এ দেশের জন্ম লগ্ন থেকেই বাস এখানে যাঁদের, আবার রয়েছেন তাঁরা যাঁরা কিনা এই সবেই এসে যোগ দিয়েছেন আমাদের সবার সঙ্গে। চিকিৎসক-আইনজিবী,শিল্পী-শিক্ষাবীদ,বিজ্ঞানী, সমাজ সংগঠক, সরকারী কর্মচারী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যবর্গ সক্কলেই এক সঙ্গে রমজানের এই রোজার শেষে-দিনাবসানে মুখে তুলবেন ইফতার সামগ্রী।
এ মাসে এ্যামেরিকার মুসলমানেরা যখন কিনা এ পবিত্র মাসটি পালন করেন- মনে পড়ে যায় আসলেই আমরা এক অভিন্ন এক এ্যামেরিকারন পরিবার।ঐ যারা কিনা আমাদের মাঝে বিভাজন আনতে অথবা ধর্মিয় স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের ক্ষেত্রে সীমবদ্ধতা টানতে সোচ্চার তাদের বিপরিতে রূখে দাঁড়াতে আমি মুসলিম সমাজের সঙ্গে তাঁদেরই পাশে দৃঢ় অবস্থান নেই। ধর্ম-বর্ণ চেহারা যার যেমনই হোকনা কেন সকল এ্যামেরিকাবাসির নাগরিক অধিকার সূরক্ষিত করতে বদ্ধপরিকর আমি।অভিন্ন আমাদের মানবতা বোধ- শান্তি ও সবার জন্যে ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার আমাদের সবার মনে-আমি গেয়ে চলি তারই জয়গান।
সংঘাতে-সংগ্রামে বাস্তুচ্যুত যাঁরা -গৃহহারা যাঁরা সারা বিশ্বে, আমাদের ঘরের দেউড়িতে- লক্ষ লক্ষ সেসব সংগ্রামী মানুষকে আমরা ভুলতে কি পারি। অনেক অনেক মুসলমান নিজ বাসগৃহের স্বাচ্ছন্দের মাঝে এবার হয়তো রমজান পালন করতে পারছেন না বা ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঈদ উদযাপনের সৌভাগ্য হয়তো মিলবে না তাঁদের। তবে ঐ সব মানুষের কষ্ট- দু:খযাতনা লাঘবের নিমিত্ত একসঙ্গে মিলে এককাট্রা উদ্যোগ প্রয়াস আমাদের চালিয়ে যেতে হবে অবশ্যই।প্রতিটি মানুষের মান-সম্ভ্রম সুরক্ষিত করায় আমাদের যে দায়বদ্ধতা, রহমতের এ মাস আমাদের সেকথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। অভিবাসিদের- শরনার্থীদের, মুসলমান যাঁরা সেই তাঁদেরকেও স্বাগত: জানানো এ দেশে ,আমরা নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসে অব্যাহত রাখবো।
প্রেসিডেন্ট পদে আমার কার্যকালের গোটা মেয়াদটাই আমি এই বিশেষ সময়টায় – এ বছর, রোজার শেষে ঈদ উদযাপনের সময়ে মুসলিম এ্যামেরিকানদের জন্যে উন্মুক্ত থেকেছে – থাকবে হোয়াইট হাউসের দুয়ার।আমার প্রশাসনের এই শেষ রমজান পালনের মাসে, ঈদ উদযাপনের সময় এ্যামেরিকায় মুসলমানদের – তাবত দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের অবদানের কথা স্মরণ করতে চাই আমি। রমাদান করিম।