অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জরিপ বলছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের ২০ শতাংশ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করেন


ছবিতে নিউইয়র্ক সিটি দেখা যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১।
ছবিতে নিউইয়র্ক সিটি দেখা যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১।

আমেরিকার বাণিজ্যিক রাজধানী নিউইয়র্ক মেট্রো এলাকায় বসবাস করা বাংলাদেশিদের মধ্যে ২০ ভাগই রয়েছেন দারিদ্র্য সীমার নীচে। এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের ২০১৯ সালের সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে উল্লেখ করা তথ্যের ব্যাপারে ফেডারেশনের কর্মকর্তা মীরা ভ্যানুগোপাল গত রবিবার জানান, ‘নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ফিলাডেলফিয়া, কানেকটিকাট অঞ্চলে বসবাসরত এশিয়ান-আমেরিকানদের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছেন বাংলাদেশিরা। এর আগে ২০১০ সালের জরিপের তুলনায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা এখন হাডসন ভ্যালিতে ১৯২%,নিউইয়র্ক সিটিতে ১১২%, নিউজার্সি ও ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৬% বাড়লেও দারিদ্র মুক্তির ক্ষেত্রে তেমন হেরফের ঘটেনি।’

নিউইয়র্ক থেকে সাংবাদিক লাবলু আনসার জানান, জরিপের সঙ্গে বাস্তবতার মিল আছে। কারণ নিউইয়র্কে চার সদস্যের একটি পরিবারের বার্ষিক আয় যদি ২৬ হাজার ডলারের কম হয়, তাহলেই তাদেরকে চরম দারিদ্রের সঙ্গে বসবাসরকারি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর কারণ হিসেবে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বাসা ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর মুল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কারোরই আয়-রোজগার বাড়েনি। এ অবস্থায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বাফেলো, শিকাগো, আপার ডারবি, হিউস্টন, ডালাসে চলে যাচ্ছে।

অন্যদিকে পারিবারিক কোটায় নবাগতরা নিউইয়র্কে বসতি গড়েছেন। স্বদেশী আমেজ ও সংস্কৃতিতে দিনাতিপাত করতে অভ্যস্ত হওয়ায় অর্থ সংকটকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন সবাই। জরিপে প্রকাশ, বাংলাদেশি, চায়নিজ, পাকিস্তানী এবং নেপালি মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশই গরিবের চেয়েও গরিবানা হালে দিনাতিপাত করছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ান আমেরিকানদের মধ্যে ১০ বছরের ব্যবধানে চরম দারিদ্র্যের সংখ্যা ১৫% বেড়েছে। ২০১০ সালে ছিল ২ লাখ ৫২ হাজার, ২০১৯ সালে তা ২ লাখ ৯০ হাজার হয়েছে। নিউইয়র্ক মেট্রো এলাকায় দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারি এশিয়ানের হার ১০.৪%। ২০১০ সালে তা ছিল ৯.২%। জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, এশিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে বাংলাদেশির সংখ্যা। তারা কঠোর শ্রম দিচ্ছেন, কিন্তু স্বপ্ন পূরণের পথে ধাবিত হতে সক্ষম হচ্ছেন না।

সিটি, স্টেট এবং ফেডারেল প্রশাসনে বিদ্যমান অনেক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে পরিচিত না থাকায় ন্যায্য পারিশ্রমিক দূরের কথা ব্যবসায়িক সুবিধাও হারাচ্ছেন তারা। মূলধারার রাজনীতিতে তারা জোরালো ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হতে সক্ষম হননি এখনও। ভোটের মাঠেও পিছিয়ে আছেন বাংলাদেশিরা।

এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটানোর তাগিদ দিয়েছেন এশিয়ানদের বন্ধু কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। তিনি এই জরিপ সম্পর্কে বলেন, অভিবাসী সমাজের নাজুক অবস্থার অনেক কিছুই আমরা জানতে সক্ষম হলাম। এখন সে সব ইস্যুতে সরব হবো। স্টেট সেনেটর জন ল্যু অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, এশিয়ানরা নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা দূর করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্টেট অ্যাসেম্বলী ওম্যান জেনিফার রাজকুমার বলেছেন, এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের এই জরিপ আমাদের চোখ-কান খুলে দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG