গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস সৃষ্টিকারী নারী, প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন। সততা নিষ্ঠা দক্ষতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগেও কেউ ভাবতে পারেননি একজন কৃষ্ণাঙ্গ ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটি জয় করতে পারবেন। কামালা হ্যারিসের এই জয়ের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রতিটি কন্যা শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত এখন কোন কিছুকে অসম্ভব মনে করছেন না। প্রয়োজন সততার, নিষ্ঠার কর্মদক্ষতার। প্রতিটি কন্যা জায়া জননীর মুখে সেই একটি লাইন…
"যদিও আমি এই অফিসের প্রথম মহিলা হতে পারি তবে আমি শেষ মহিলা নই।"৫৬ বছর বয়সী হ্যারিস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভোটারদের ধন্যবাদ জানান।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্বারা পেরি বলেন, "আমাদের সুপ্রিম কোর্টে মহিলা ছিল কংগ্রেসে স্পিকার হিসাবে ন্যান্সি পেলোসি রয়েছেন তবে কার্যনির্বাহী পদে কখনও কোনও মহিলাকে আমরা পাইনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে।শুধু তাই নয় এর আগে কখনো আমরা ভিন্ন বর্ণের, অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তানকে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে পাইনি।
ভারতীয় মা এবং জামাইকান পিতার কন্যা, হ্যারিসের জন্ম ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায়। যে স্কুলে বর্ণবাদী একীকরণের চেষ্টার অংশ হিসাবে শিশুকালে তাকে আলাদা করা হয়েছিল সেখানে এখন তার একটি মুরাল রয়েছে।তিনি অনেক নারীর পথ প্রদর্শক। স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
ওয়াশিংটন, ডিসি-র একটি কৃষ্ণাঙ্গ-কলেজ হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্রী, হ্যারিস ২০০৪ সালে প্রথম সান ফ্রান্সিস্কোর কৃষ্ণাঙ্গ প্রসিকিউতর হন এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ পান। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু প্রগতিশীল লোক তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছিলেন। তারা বলেন যে হারিস বেশ কঠোর প্রসিকিউটর ছিলেন, মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন।তিনি সর্ব প্রথম ক্যালিফোর্নিয়াতে ইতিহাস গড়েন যখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটে নির্বাচিত হন।
ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের শ্যানন বো ও ব্রায়ান বলেন,"এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে লোকেরা দেখে যে তাদের মতো দেখতে লোকেরা শীর্ষ ক্ষমতায় রয়েছেন।
কামালা একজন স্ত্রী, বোন, সৎ মা, আন্টি। তাঁর এই প্রতিটি ভূমিকা সম্পর্কে কথা বলেন তার স্বামী আইনজীবী ডগ এমহফ, যিনি হোয়াইট হাউসের সেকেন্ড জেন্তালম্যান হয়ে আরও একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে, প্রয়োজন হলে প্রেসিডেন্টর যেকোনো সাহায্যে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। বিশ্লেষকরা বলছেন যে হ্যারিস তার ঐতিহাসিক অর্জনকে কাজে লাগাবেন।
ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ার বারবারা পেরি বলেন,"তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধিত্বকারী একজন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, তবে আমি মনে করি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্নও রাজ্য ঘুরে বেড়াবেন দেখানোর জন্য তিনি কি কাজ করছেন। হোয়াইট হাউসে এই গুরু দায়িত্ত পাবার জন্য ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে তার জন্য প্রার্থনা করা হয়, আর হয়তো এত মানুষের ভালবাসার জোরে তিনি পেরেছেন এই ইতিহাস সৃষ্টি করতে।