অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী ওড়িশার পুরীতে রথযাত্রা শুরু


সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী ওড়িশার পুরীতে আজ জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শুরু হয়েছে। সন্ধ্যায় যাত্রা শেষ হয় আড়াই কিলোমিটার দূরে জগন্নাথ মন্দিরের সামনের পথ ধরে গুন্ডিচা মন্দিরে। আজ মঙ্গলবার সকাল বেলায় চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে পুরীর গজপতি মহারাজ মন্দির চত্বরে সামনের জায়গাটা প্রতীকী ভাবে সোনার হাতল লাগানো ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করেন। তার পর সেই অঙ্গনে আস্তে আস্তে মন্দির থেকে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি এনে রাখা হয়। সেখান থেকে যার যার রথে আরোহন করতে করতে বেলা গড়িয়ে যায়। তার মধ্যেই স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী যা যা করণীয় তা করা হয়। দমকলের গাড়ি থেকে হোজে করে ওষুধ মিশ্রিত জল ছেটানো হয় যাঁরা রথ টানবেন, তাঁদের উপরে। গতকাল রাত ৯টা থেকেই চুয়াল্লিশ ঘণ্টার কারফিউ জারি হয়েছে গোটা পুরী জেলায়। কোনও ভক্ত যাতে উৎসাহের আতিশয্যে জগন্নাথ মন্দিরের সামনে বা রথের রশি ধরার জন্য ছুটে আসতে না পারেন তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বলা হয়েছিল প্রতিটি সেবায়েতকে করোনার পরীক্ষা করা হবে। তাতে যদি সুস্থ বলে প্রমাণিত হয় তবেই তিনি বা তাঁরা রথযাত্রায় যোগ দিতে পারবেন। কিন্তু গতকালই একজন সেবায়েতের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তবে বাকি সেবায়েতদের সকলেই সুস্থ রয়েছেন। নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রাখতে জগন্নাথ দেবের, বলরাম দেবের এবং সুভদ্রা দেবীর রথ একটি অন্যটির থেকে এক ঘন্টা পর পর বেরিয়েছে। বেলা একটার সময় শুরু হয়েছে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা, দুটোর সময় বলরামের রথযাত্রা, আর তিনটের সময় সুভদ্রা দেবীর রথযাত্রা। প্রতিটি রথের মাঝখানে এই ব্যবধানটা ওড়িশা সরকার এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়েছে। প্রতিটি রথের সঙ্গে সেগুলি টানার জন্য পাঁচশো জন করে সেবায়েত ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককে মাস্ক পরে থাকতে হয়েছে। যদিও গতকাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রথযাত্রার হবে জানার পরই সেবায়েতদের সকলেই আনন্দের আতিশয্যে মাস্ক ছাড়াই বেরিয়ে পড়েছিলেন ঢোল করতাল নিয়ে। সেটা যাতে আর না হয় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যেবেলা গুন্ডিচা মন্দির, যেটাকে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি বলা হয়, সেখানে তিনটি রথই পৌঁছে গিয়েছে। পথে কোনও বিঘ্ন হয়নি এবং ফাঁকা রাস্তা ছিল বলে গরগর করে রথ চলে গিয়েছে। সাতদিন পরে আবার উল্টোরথ হবে। পশ্চিমবঙ্গের মাহেশে প্রতি বছর যে ঐতিহ্যবাহী রথ হয়, আজ তা বেরোয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল শুধুমাত্র পুরীতেই রথ বেরোতে পারবে, আর কোথাও নয়। সেই অনুযায়ী মাহেশের রথ এবার ৬২৪ বছর পরে বন্ধ রইল। একইভাবে কলকাতায় ইসকনের রথও বন্ধ রয়েছে। যদিও ইসকনের রথ সেই তুলনায় অনেকটাই নতুন। সব নিয়ম মেনে মাহেশে ও কলকাতায় ইসকনের মন্দিরে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার পুজো করা হয়েছে, রথ না বেরোলেও।

দীপংকর চক্রবর্তী, ভয়েস অফ আমেরিকা, কলকাতা

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:08 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG