বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববাজারে গার্মেন্টস পণ্যের বিক্রয় ও চাহিদার নিম্নগতির প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বা গার্মেন্টস খাতের রপ্তানির ওপরে। এ বছরের শেষ ৬ মাস বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের জন্য বড় এক সংকটকাল বলেই মনে করা হচ্ছে। করোনার মধ্যেও এ বছরের প্রথম ৬ মাসে বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত পূর্ণ-সক্ষমতার মধ্যে মাত্র গড়ে ৫০ শতাংশ পণ্যের অর্ডার পেলেও আগামী ৬ মাস অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের অর্ডার পাওয়া গেছে সক্ষমতার মাত্র ৩৫ শতাংশ। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ তাদের নিজস্ব এক সমীক্ষা শেষে এসব তথ্য জানিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের অর্ডারই যে ৩৫ শতাংশে নেমেছে তাই নয়, দামও কমেছে শতকরা ১৪ শতাংশ। বিজিএমইএ বলছে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের যে সক্ষমতা রয়েছে তাতে আগামী ৬ মাসে ৩৭ কোটি পিস পোশাক তৈরি করা সম্ভব। অথচ এ সময়ে অর্ডার মিলেছে মাত্র ১২ কোটি ৭০ লাখ পিসের। আগামী ডিসেম্বরের পরিস্থিতি আরও খারাপ অর্থাৎ অর্ডার মিলেছে মাত্র ১৭ শতাংশ অর্থাৎ ১ কোটি পিস পোশাকের।
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের মন্দাকাল চলছে। গার্মেন্টসসহ বহু খাত এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৈশ্বিক এ পরিস্থিতিতে সহসাই গার্মেন্টস খাতের সংকটকাল কাটবে না বলেই মনে করেন বাংলাদেশের প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
গার্মেন্টস খাতের সংকটের কারণে এই খাতের ২০ লাখেরও বেশি শ্রমিক আগের তুলনায় অর্ধেক বা তারও কম মজুরীতে বর্তমানে কর্মরত আছেন। সংকট বাড়লে লাখ লাখ শ্রমিকের পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন।