বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলে ক্রমবর্ধমান লড়াইয়ের কারণে ইথিওপিয়া এখন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। এই লড়াই সংঘাত-পীড়িত টিগ্রায় প্রদেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ পৌঁছাতে বাধার সৃষ্টি করেছে।
টিগ্রায়ের রাজধানী মেকেলেতে সর্বশেষ খাদ্যের চালান পৌঁছেছিল গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। সেই থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশের লাখ লাখ চরম ক্ষুধার্ত মানুষ খাদ্য থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
.
যুদ্ধরত দলগুলোসহ আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি সতর্ক হুঁশিয়ারি প্রকাশ করে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র টমসন ফিরি বলেন, উত্তরাঞ্চলীয় ইথিওপিয়ায় তার সংস্থার কার্যক্রম এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।তিনি জানান, এই অঞ্চলের তীব্র লড়াই খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।
.
টমসন ফিরি আরও বলেন, "অপুষ্ট শিশু ও নারীদের চিকিৎসার জন্য পুষ্টিকর খাবারের মজুত এখন নিঃশেষ হওয়ার পথে এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সর্বশেষ খাদ্যশষ্য, ডাল ও তেলের মজুদ আগামী সপ্তাহে বিতরণ করা হবে"। "লড়াইয়ের কারণে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা এখন সর্বনিম্নে। তৃণমূলে কর্মরত ডব্লিউএফপির সহায়তা কর্মীরা আমাকে জানান, খাদ্য গুদামগুলো এখন সম্পূর্ণ নিঃশেষ অবস্থায়"। ২০২০ সালের নভেম্বরে ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী ও টিগ্রায়ের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই থেকেই পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হতে থাকে।
জাতিসংঘ জানায়, শুধুমাত্র টিগ্রায়ের ৫০ লাখ ২০ হাজার মানুষ বেঁচে থাকার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করছেন। সংস্থাটি জানায় সেখানে ৪ লাখ লোক দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থায় বসবাস করছেন। আরও ২০ লাখ মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি টিগ্রায়ের ২০ লাখ ১০ হাজার মানুষ এবং আমহারা ও আফার অঞ্চলের অতিরিক্ত ১০ লাখ ১০ হাজার মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে।তবে অর্থ সরবরাহ এখন সীমিত।জাতিসংঘের খাদ্য দপ্তর তাই জরুরি ভিত্তিতে আগামী ছয় মাস ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে তাদের জরুরি খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বজায় রাখতে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।