বাংলাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে একটি পরিকাঠামো ব্যবস্থা স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং অষ্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগ মন্ত্রী ড্যান তেহান আজ এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। গত পাঁচ দশকের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাঠামো হল এই ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট বা টিফা। এটি দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ উম্মোচনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। টিফা চুক্তির মাধ্যমে তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য ও প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষা সেবা ছাড়াও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সব ধরণের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। টিফার অধীনে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে যাতে দুদেশের সংশ্লিষ্ট খাতের প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা অর্জনের আলোচনা এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করবো এই ফ্রেমওয়ার্ক বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে শুল্ক মুক্ত ও কোটা মুক্ত সুবিধা ধরে রাখা, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ সকল প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কাজ করবে। তিনি অষ্ট্রেলিয়ারম ন্ত্রী তেহানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে অষ্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী তেহান বলেন, তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে আগামী বছর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশে আসবেন। অষ্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রসার এবং তা অধিকতর গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই ধরণের অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের উভয় দেশে কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে আরো অবদান রাখতে পারবো। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং জ্বালানি চাহিদা পূরণে অষ্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। তিনি অষ্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বহাল রাখার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়ার দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য গত দশকে প্রায় ছয় গুণ বেড়ে গত বছরে ২.৬ বিলিয়ন অষ্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে। আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও টিফা উভয় দেশ থেকে নতুন পণ্যের বাণিজ্যিক ক্ষেত্র সৃষ্টি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহজ করতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে অষ্ট্রেলিয়াস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার সফিউর রহমান এবং বাংলাদেশস্থ অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরিমিব্রায়ার বক্তব্য রাখেন। এসময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের দক্ষিণ এশিয়ার স্থল অঞ্চলে ৩০০ মিলিয়ন জনগণের বাজারে প্রবেশের জন্য অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রবেশ পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।