হংকংয়ে বিধায়করা যখন একটি বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন সেখানকার দাঙ্গা পুলিশ আইনসভার চারিদিকে বেষ্টনী তৈরি করেছে। ঐ বিতর্কিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে, চীনের জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা হংকংয়ে অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। এই প্রস্তাব বানচাল করতে ভবনটি ঘেরাও করতে এর আগের রাতে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানোর পর, তাদের ঐ স্থাপনা থেকে দূরে রাখার জন্য এর চারপাশে পুলিশ পানি ভর্তি প্রতিবন্ধক রেখে দেয়। তবে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী শহরটির ব্যবসায়ীক এলাকায় সমবেত হয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে এবং পুলিশের বিপক্ষে শ্লোগান দেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের উপর মরিচের গুড়ো ছুড়ে দেয়।
হংকংয়ে বিধায়করা যে প্রস্তাবের উপর দ্বিতীয়বার বিতর্ক করছেন সেটা হলো যদি কেউ ইচ্ছে করে ব্যঙ্গাত্মক ধ্বনি দিয়ে কিংবা অন্য কোন ভাবে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করে তাকে তিন বছরের জেল এবং ছয় হাজার ডলারেরও বেশি জরিমানা করা হবে। গত বছর সেখানে ফুটবল ম্যাচের সময়ে দর্শকরা জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক ধ্বনি দেয়ার পর এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। গত বছরের শেষার্ধে বিশ্বের এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থলে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচন্ড এবং প্রায়ই সহিংস বিক্ষোভ হয়। বিচারের জন্য হংকংবাসীকে চীনের মূল ভূখন্ডে পাঠানোর বিতর্কিত প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে প্রথম দিকে বিক্ষোভ শুরু হয়, তবে পরবর্তীতে তা বৃহত্তর গণতন্ত্রের দাবিতে পরিণত হয়। জাতীয় সঙ্গীত সংক্রান্ত প্রস্তাবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত সপ্তায় চীনের জাতীয় কংগ্রেসে উত্থাপিত জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রস্তাবও।
চীনের জাতীয় কংগ্রেসের একটি অধিবেশনে গত সপ্তায় এই প্রস্তাবিত আইনের কথা বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায় যা কিছু যেমন বিচ্ছিন্নতাবাদ, রাষ্ট্রবিরোধীতা এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমকে এই আইন প্রতিহত করবে এবং এসবের জন্যে শাস্তি দেবে। এই আইন হংকংয়ে চীনা জাতীয় নিরাপত্তা দপ্তরকে তাদের শাখা খোলারও অনুমতি দেবে। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন চীনের কাছে হংকংকে হস্তান্তরিত করার পর এই প্রস্তাবিত আইনকে কফিনে পেরেক ঠুকে দেয়া বলে, এর ব্যাপক নিন্দে করেছেন ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলো। এই আইন হংকং এর আইনকে পাশ কাটিয়ে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।